অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় গত সেপ্টেম্বরে লাইফ সাপোর্টেও নিতে হয়েছিল এই শিল্পীকে।
Published : 22 Oct 2024, 11:18 PM
রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার কারণে আবারও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার।
তার স্ত্রী মেরি মনোয়ার জানিয়েছেন, সোমবার ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। রক্ত দেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেরি মনোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হুট করে হিমোগ্লোবিন কমে রক্তশূন্যতার কারণে গত পরশুদিন আবার হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। রক্ত দেওয়া হয়েছে, এখন ভালো আছেন। আশা করছি আগামীকাল (বুধবার) রিলিজ দেওয়া হবে।”
এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল ৮৯ বছর বয়সী এই শিল্পীকে। তখন অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় লাইফ সাপোর্টেও নিতে হয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন তিনি।
তার স্ত্রী বলেন, “আমরা তো গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাসায় নিয়ে গিয়েছিলাম। পরশু দিন আবার হাসপাতালে আনতে হল। এখন অবস্থা একটু ভালো।”
সব্যসাচী এই শিল্পী একাধারে চারুশিল্পী, নাট্যনির্দেশক ও শিল্প গবেষক। বাংলাদেশের পাপেট শিল্পকে নতুন মাত্রা দেওয়া মুস্তাফা মনোয়ার কবি গোলাম মোস্তফার ছেলে। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০০৪ সালে তিনি একুশে পদক পান।
বর্ণিল কর্মজীবনে আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন খ্যাতনামা এ শিল্পী। ১৯৯০ সালে টিভি নাটকের জন্য টেনাশিনাস পদক, ১৯৯২ সালে চারুশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ পুরস্কার, ১৯৯৯ সালে শিশু শিল্পকলা কেন্দ্র কিডস কালচারাল ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম কর্তৃক কিডস সম্মাননা পদক, ২০০২ সালে চিত্রশিল্প, নাট্য নির্দেশক এবং পাপেট নির্মাণে অবদানের জন্য শিশুকেন্দ্র থেকে বিশেষ সম্মাননা লাভসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
মুস্তাফা মনোয়ারের জন্ম ১৯৩৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর যশোরের মাগুরা মহকুমার (বর্তমান জেলা) শ্রীপুরে। তিনি নাকোল গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবা কবি গোলাম মোস্তফার পৈত্রিক নিবাস ছিল ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে। পাঁচ বছর বয়সে মা জমিলা খাতুন মারা যান। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি।
নারায়ণগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে বিজ্ঞানে ভর্তি হন। সেখানে তিনি পড়াশোনা না করে কলকাতা চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে কলকাতা চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয় থেকে ফাইন আর্টসে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।
১৯৬৫ সালে মেরী মনোয়ারের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক ছেলে সাদাত মনোয়ার ও এক মেয়ে নন্দিনী মনোয়ার।
কর্মজীবন শুরু করেন পূর্ব পাকিস্তান চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে। পরে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-মহাপরিচালক, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ টেলিভিশন ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ও এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।
এ ছাড়া জনবিভাগ উন্নয়ন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ও এডুকেশনাল পাপেট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
পুরনো খবর-