আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
Published : 02 Jun 2024, 09:21 PM
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠানো নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার কারণ অনুসন্ধানে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হককে প্রধান করে রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে ওই কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তাদেরকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, “গত ৩১ মে পর্যন্ত বিএমইটি থেকে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭২ জন মালয়েশিয়া গিয়েছেন। সেই হিসাবে ১৬ হাজার ৯৭০ জনের কম-বেশি যেতে পারেননি। যারা এ সমস্যার জন্য দায়ী হবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তদন্ত কমিটি কী করবে, তার ব্যাখ্যায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কর্মানুমতি ও বিএমইটির ক্লিয়ারেন্স কার্ড পাওয়ার পরও মালয়েশিয়াতে কর্মী পাঠাতে না পারার কারণ চিহ্নিত করা, নির্ধারিত সময়ে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে ব্যর্থ রিক্রুটিং এজেন্সি চিহ্নিত করা, মালয়েশিয়া যেতে পারেননি এমন কেউ অভিযোগ করলে তা আমলে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণ করবে কমিটি।”
মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সে দেশে যাওয়ার অনুমোদন পাওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের প্রবেশের শেষ দিন ছিল ৩১ মে। কর্মী ভিসায় আর কেউ সেখানে ঢুকতে পারবেন না। এই সুযোগে কিছু এজেন্সির যোগসাজশে এই রুটে ভাড়া ৩০ হাজার টাকা থেকে কয়েক গুণ বেড়ে লাখ টাকার বেশি হয়ে যায়।
এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে অনেকে শুক্রবার সকাল থেকে বিমানবন্দরে আসতে থাকেন। যেসব এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি, তারাই ডেকে আনে তাদের। সন্ধ্যা পর্যন্ত বিমানবন্দরে উৎকণ্ঠিত মানুষের ভিড় দেখা যায়।
সংকট লাঘবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরে একটি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করে। কিন্তু তাতে সর্বোচ্চ ২৭১ জন যাত্রীর মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ মেলে।
দিনভর অবস্থান করে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়ে রাতে কয়েকশ মানুষ বিমানবন্দর থেকে ফিরে যান।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকার পরও বিমানের টিকেট না পাওয়ায় অন্তত ৩০ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি বলে ধারণা দেয় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম।
৫-৬ লাখ টাকা দিয়েও অনেকে যেতে পারেনি। ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েও অনেকেই টিকেট পায়নি, বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠাতে সরকার বরাবরই আন্তরিক ছিল। পত্রিকায় জরুরি বিজ্ঞপ্তি সম্বলিত বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। অতিরিক্ত ২৩টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এছাড়া মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সময় বাড়ানোর আবেদন করে আমরা একটি চিঠি পাঠিয়েছি।”
সিন্ডিকেটের বিষয়ে বলা হয়, “যে দেশ জনশক্তি নেবে তারা চায় বলেই সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। তবে সরকার কোনো সিন্ডিকেটে বিশ্বাস করে না। সরকার অনুমোদিত সকল এজেন্সিগুলো যেন লোক পাঠাতে পারে, সেটা চায় সরকার।”
শিগগিরই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী জানান বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।