তাকে ভালোবেসে সীমাহীন চোখ মদ হয়ে যায়।
Published : 04 Feb 2023, 07:14 PM
তোমার লাল রঙ শব্দ করে
না লিখলে তুমি জানবে না
তোমাকে ভাবতে গিয়ে আমার শেখা হয়নি নারীবিদ্যা!
এই আমি যে কোন রমনীর আঙুলে রান্না করি না
ক্ষুধায় নিজেকে ছিঁড়ে নিজে খাই, সেলাই শিখি —
হাতে সেলাই মেশিন চলে, সুঁই ঢোকে আর বের হয়
চলন্ত ট্রেনের দোলায় গলে নামে হুইসেল।
তোমার আগুন লাল কয়লার ভিতরে কেমন!
চেয়ে থাকি লেলিহান দেখি, জ্বলে গেছে সব তেষ্টার দাগ —
তোমার ত্বকের নিচে তার মাংসের ছাই!
আমাদের পোশাকের বোতামে লাল রঙের শব্দ ছিলো
তোমার চোখের অন্ধকারে লাল বেশি শব্দ করে
বিকেলের উদাসী চায়ে কবিতার প্রথম পংক্তি মনে না ধরলে
পোষমানা বিকেলের অগ্রন্থিত ঠোঁট খুলতো না
আজকাল এই সহজ কবিতা পড়ে তুমি কী আর প্রেমে পড়ো!
একা বেজোড় আমি জীবন নিয়ন্ত্রণ করি না,
তোমাকে দেখতে দেখতে ভেঙে যেতে দেই
নিজেও ভাঙ্গি কঠিনের ভিতরে নরম ঘর-সংসার
না লিখলে তুমি কীভাবে জানবে —
দুঃখের জানালায় আমি পর্দা পছন্দ করি না!
আমাকে দেখতে থাকুক আলো-আঁধার,
যদি পারে বৃষ্টির পতন-সর্বনাশ!
তুমি এখন উপভোগ করো কাটা চামচের যৌনশব্দ
ডাইনিং টেবিলে সেলাইয়ের ফুল তোমার খাদ্য চাষ!
দেশভাগ
তোমার বুকে শ্বাস আছে না, শ্বাস?
যার সঙ্গে সেলাই করেছি আমার ছেঁড়া নিঃশ্বাস —
তোমার কাছে পৌঁছাতে চেয়েছি
একদিন দুইদিন প্রতিদিন
এখনও ভাসি বাতাসে তোমার বাড়ির গাছে
ডুবতে ডুবতে ডুবমৃত্যুতে সে বেঁচে আছে
তোমার আঙুলে আঙটি আছে, বিষের আঙটি?
যাকে চাইতে চাইতে —
শেষ হয়েছে আমার খুচরো পয়সার ভাঙতি!
পাখির যখন আকাশ থাকে না
আঙুলে শীতকাল এসেছে স্পর্শ মরা ডাল —
সব শেষ হলে আমি কি আছি, ছিলাম যার তা?
কিছু না নিয়েই শেষ হলো তোমার আমার সবটা!
মৃত্যু মানি না মেয়ে, দুইজন মানচিত্র টানি —
সৎকার শেষে তৃষ্ণায় কী চাই,
জল না পানি?
আসক্তিকাল
আলগা করা ফিতায় সে ঘুমায়, ঘুমাক!
চাঁদ টেনে পাশে আনি, আমি জ্যোৎস্নায় ঘুমাই না!
আমিও আলগা করি মেঘ, ডুবে গেলে শূন্যতা খাই।
শূন্যতায় ভেসে ওঠে মুঠো মুঠো হৃদরোগ
আমি কোথাও নাই, তাকে পাইলে একা হয়ে যাই —
কানে কানে আসক্তির ঝালঠোঁট রাত কাঁপায়
ফিসফিস শব্দ কতো শক্ত হয় অন্ধকারে —
আমি আরও শক্ত হই, লাঠিখেলার কী জানে সে!
যে মরে মরুক, মরে যাক!
যুদ্ধে যাবো এই আনন্দে রক্ত ভাসানোর প্রেমে পড়ি —
পড়ি আর মরি, হায়! তাকে পাইলে একা একা মরি!
প্রণয়নীল
আমি কাকে ভুলে যাবো? কে আমায় ছেড়ে যায়?
মনে প্রতি মুহূর্তে যে জন্ম নেয়,
কতো অপরিচিত দৃশ্য চৌকাঠে এসে বসে থাকে!
হাওয়ায় ঝাঁপ দেয় যে পাতা
তার সঙ্গে আমার কে কে যায়?
আমার পায়ে পায়ে কারো সব পথ মুখস্থ করেও
তার স্বপ্ন আঁকা যায় কেবল তার নিজের আঙুল ধরে —
আর কাকে আমি হৃদয়-বয়সী পাই নিজের মতো করে?
মন ফেলে গেলে যেটুকু ছায়া পড়ে চৌকাঠের শূন্যতায়
তাকে ভালোবেসে সীমাহীন চোখ মদ হয়ে যায়।
দাঁড়াই পায়ের পাতায়, রাস্তা জীবন্ত দূরগামী
নিজেকে উড়াই, নিজের ঘুড়ি আমি —-
বাতাস আসে, সে আমার কাছে এমনি আসে
কারো শ্বাসনালীর দীর্ঘশ্বাসে।