ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গোপনে সৌদি আরব সফর করে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো।
Published : 23 Nov 2020, 03:49 PM
সোমবার এ খবর নিশ্চিত করেছেন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা এবং লিকুদ পার্টির এক সদস্য।
রোববারের এ সফর সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ইসরায়েলি আর্মি রেডিওতে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আসলে বৈঠক হয়েছে এবং তা প্রকাশ্যেও এসেছে, যদিও এ মুহূর্তে তা পুরোপুরি সরকারিভাবে ঘোষিত বৈঠক নয়। তারপরও এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। এক অভাবনীয় অগ্রগতি।”
ইসরায়েলের কান পাবলিক রেডিও এবং আর্মি রেডিও এর আগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েলের মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক জোসেফ কোহেন রোববার সন্ধ্যায় সৌদি আরবের নিও শহরে যুবরাজ সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সেখানে আগে থেকেই রিয়াদ সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে বৈঠক করতে উপস্থিত ছিলেন যুবরাজ সালমান।
ইসরায়েলের সঙ্গে আরব রাষ্ট্রগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মধ্যে নেতানিয়াহুর সৌদি আরব সফরের এ খবর এল।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় কিংবা জেরুজালেমের মার্কিন দূতাবাস থেকে এ খবরের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য আসেনি।
ওদিকে, সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নেতানিয়াহুর সফরের কথা উল্লেখ করেনি। সৌদি আরবের সরকারি গণমাধ্যমও তাৎক্ষণিকভাবে এ সম্পর্কে রয়টার্স বার্তা সংস্থার কোনও প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
তবে ইসরায়েলের হারেৎজ পত্রিকা বিমান চলাচল তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, সংক্ষিপ্ত সময়ের ভ্রমণে একটি ব্যক্তিগত বিমান ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিব থেকে সৌদি আরবের নিও-তে গেছে।
রোববার সেখানেই যুবরাজ সালমান এবং পম্পেওর বৈঠক কর্মসূচি নির্ধারিত ছিল। বিমানটি বিকাল ৫ টায় ইসরায়েল ছেড়ে এসেছিল এবং মধ্যরাতের পর আবার তেল আবিবে ফিরে গেছে বলে জানিয়েছে ‘দ্য জেরুজালেম পোস্ট’ পত্রিকা।
Constructive visit with Crown Prince Mohammed bin Salman in NEOM today. The United States and Saudi Arabia have come a long way since President Franklin Delano Roosevelt and King Abdul Aziz Al Saud first laid the foundation for our ties 75 years ago. pic.twitter.com/KZ4XMkah03
— Secretary Pompeo (@SecPompeo) November 23, 2020
খবরটি নিশ্চিত হলে এটিই হবে কঠোর মুসলিম অনুশাসনের দেশ সৌদি আরবে কোনও ইসরায়েলি নেতার প্রথম প্রকাশ্যে স্বীকৃত সফর।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার মুখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর মৈত্রী স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চুক্তি করার পর এবার অন্য আরব দেশগুলোকেও এপথে আনার চেষ্টা চলছে।
সৌদি আরব এ পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে। কিন্তু গত অগাস্ট থেকে সৌদি আরব উপসাগরীয় দেশগুলোতে ইসরায়েলি বিমান চলাচলের জন্য তাদের আকাশসীমা খুলে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর আগেও বলেছেন, সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করুক সেটিই তিনি আশা করেন।
তবে সৌদি আরব এ ব্যাপারে মন বদলেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শনিবার সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সৌদি আরব সম্পর্ক পুরোপুরি স্বাভাবিক করাকে সমর্থন করে। তবে তা হতে হবে ইসরায়েল-ফিলিস্তনের মধ্যে একটি স্থায়ী এবং পরিপূর্ণ শান্তিচুক্তি হওয়ার শর্তে।