সাবেক সোভিযেত প্রজাতন্ত্র আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার সীমান্তে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আরও ১২ জন নিহত হয়েছে।
Published : 15 Jul 2020, 03:20 PM
দেশটি দুটির উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে রোববার থেকে দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়ে মঙ্গলবার তৃতীয় দিনে গড়ায়।
এ দিন আজারবাইজানের সাত সৈন্য ও এক বেসামরিক নিহত হয়, অপরদিকে আর্মেনিয়ার চার সৈন্য নিহত হয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে রোববার ও সোমবারের সংঘর্ষে আজারবাইজানের চার সৈন্য নিহত ও পাঁচ জন আহত আর আর্মেনিয়ার তিন সৈন্য ও দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছিল।
আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত আজারবাইজানের নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে এই দুই সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে, তবে এবারের সংঘর্ষের ঘটনাটি ওই বিরোধপূর্ণ অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে আর্মেনিয়ার তাভুশ অঞ্চলে ঘটেছে।
উভয়পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ, অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন ও গোলাবর্ষণের অভিযোগ করেছে।
আজারবাইজানের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী কেরেম ভেলিয়েভ জানিয়েছেন, আজারবাইজান সেনাবাহিনীর একজন মেজর জেনারেল ও একজন কর্নেলসহ সাত সৈন্য নিহত হয়েছেন। শত্রুপক্ষের ওপর ‘ধ্বংসাত্মক আঘাত’ হানা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
অপরদিকে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আর্মেনিয়া সেনাবাহিনীর একজন মেজর ও একজন ক্যাপ্টেনসহ চার সৈন্য নিহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনা নাগদালিয়ান জানান, সীমান্তবর্তী শহর বের্ড এ গোলাবর্ষণ করেছে আজারবাইজেনীয় বাহিনী, জবাবে গোলাবর্ষণকারী ‘আজেরি ঘাঁটিটি ধ্বংস’ করে দিয়েছে আর্মেনীয় বাহিনী।
এই প্রতিবেশী দেশ দুইটির সংঘর্ষকে ঘিরে বিশ্ব বাজারে তেল ও গ্যাস সরবরাহের করিডর হিসেবে ব্যবহৃত দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার হুমকিতে পড়তে পারে, এমন সম্ভাবনার কারণে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সংঘর্ষ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলও উদ্বিগ্ন।
রাশিয়া দুই পক্ষকে অস্ত্রবিরতিতে যাওয়ার ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালনে মস্কো প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ।
সামরিক জোট নেটো সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে দেশ দুটিকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান বলেছেন, আজারবাইজানের সঙ্গে তুরস্কের শক্তিশালী ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক মিত্রতা থাকায় এবং উভয় দেশ যৌথ জ্বালানি প্রকল্পে যুক্ত থাকায় আজারবাইজানের বিরুদ্ধে কোনো হামলা হলে তুরস্ক দেশটির পাশে দাঁড়াবে।
“আমাদের সব রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, সামাজিক সম্পর্ক ও আমাদের বিশ্বকে এই দিকে চালনা করা আমাদের একান্ত দায়িত্ব,” এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন তিনি।
আজারবাইজানের পার্বত্য অঞ্চল নাগোর্নো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর হাতে আছে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর অঞ্চলটিতে লড়াই শুরু হলে আর্মেনীয়রা স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়।
১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে অস্ত্রবিরতি হলেও আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া ধারাবাহিকভাবে পরস্পরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে।