একেবারে শেষ মুহূর্তে থমকে গেল ভারতের স্বপ্ন, পৃথিবী থেকে দীর্ঘ ৪৭ দিনের যাত্রা শেষে চাঁদের মাটি থেকে মাত্র ২.১ কিলোমিটার দূরে থাকতেই চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল যোগাযোগ।
Published : 07 Sep 2019, 09:12 AM
আর এর মধ্যে দিয়ে প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতের রোভার নামানোরর চেষ্টা কার্যত ব্যর্থ হয়ে গেল।
তবে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) বিজ্ঞানীদের নতুন অভিযানের উৎসাহ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “আমরা পিছিয়ে পড়িনি… চাঁদে পৌঁছনোর জন্য আমাদের ইচ্ছাশক্তি আরও প্রবল হল, সংকল্প আরও দৃঢ় হল।”
চাঁদের ওই অংশটি এখনও মানুষের কাছে অজানা। সেখানে জমাট বরফ আকারে পানি থাকার বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছিলেন ভারতের চন্দ্রযান-১ অভিযান থেকে।
কথা ছিল, ঠিকঠাক পৌঁছাতে পারলে চন্দ্রযান-২ এর রোভার প্রজ্ঞান নতুন তথ্য পাঠাবে পৃথিবীতে। সেখান থেকে হয়ত জানা যাবে, চাঁদের বুকে কতটা পানি কী অবস্থায় আছে।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২২ জুলাই মিশন শুরুর পর সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। তাদের সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি মহাকাশযান চন্দ্রযান-২ চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল গত ২০ অগাস্ট।
চাঁদে নিয়ন্ত্রিত অবতরণের মিশন সফল হলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের পর তালিকায় চতুর্থ দেশ হিসেবে নাম লেখাতে পারত ভারত। প্রজ্ঞান ঠিকমত কাজ করলে ভারত হত চন্দ্রপৃষ্ঠে রোভার চালাতে সফল হওয়া তৃতীয় দেশ। আর ভারত হত চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে নিয়ন্ত্রিত অবতরণে সক্ষম হওয়া প্রথম দেশ।
সেই মুহূর্তের সাক্ষী হতে পুরো ভারতবাসীর নজর ছিল টেলিভিশনে অথবা ইসরোর লাইভকাস্টে। আর চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডারের চাঁদে নামার দৃশ্য দেখতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গালুরুর শ্রীহরিকোটায় ইসরোর সদরদপ্তরে।
অরবিটার থেকে আলাদা হয়ে ল্যান্ডার বিক্রম অবতরণ শুরু করলে করতালিতে ফেটে পড়েছিল ইসরোর কন্ট্রোল রুম। কাচের দেয়ালের বাইরে দর্শক সারিতে বসে সেই দৃশ্য দেখছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
কিন্তু ইসরোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের স্ক্রিনে যে বিন্দু আর রেখায় বিক্রমের অবস্থান দেখানো হচ্ছিল, সেটা হঠাৎ থমকে গেল। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ল্যান্ডার বিক্রমের উচ্চতা তখন ২.১ কিলোমিটার। চন্দ্রযান-২ অভিযান কার্যত শেষ হয়ে গেল সেখানেই
ভারতের মহাকাশ গবেষণার পুরোধা বিজ্ঞানী বিক্রম সারাভাইয়ের নামে চন্দ্রযানের ল্যান্ডারের নাম রাখা হয়েছিল বিক্রম। তার ভেতরে ছিল রোভার প্রজ্ঞান, যার লক্ষ্য ছিল চাঁদের মাটি থেকে মানুষের জন্য নতুন জ্ঞান আহরণ।
ঠিক কী কারণে ল্যান্ডার থেকে সংকেত আসা বন্ধ হয়ে গেল, শেষ পর্যন্ত বিক্রমের ভাগ্যে কী ঘটেছে সে বিষয়গুলো এখনও জানতে পারেননি ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
#WATCH PM Narendra Modi hugged and consoled ISRO Chief K Sivan after he(Sivan) broke down. #Chandrayaan2 pic.twitter.com/bytNChtqNK
— ANI (@ANI) September 7, 2019