জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে ভারতের পদক্ষেপ ঠেকাতে জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ৪৫ জনের বেশি এমপি। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের কাছে লেখা এক চিঠিতে তারা এ আহ্বান জানান।
Published : 11 Aug 2019, 10:29 PM
চিঠিটি লেখেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সের লেবার পার্টির এমপি ফয়সাল রশীদ এবং এতে স্বাক্ষর করেন অন্যান্য পাকিস্তানি ওব্রিটিশ বংশোদ্ভূত এমপিদের পাশাপাশি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপিরুশনারা আলী ও রুপা হকও।
ভারত সরকারের কাশ্মীরের স্বায়ত্ত্বশাসন কেড়ে নেওয়া প্রসঙ্গে লেখা এ চিঠির বিষয়বস্তু তুলে ধরেছে পাকিস্তানের ইংরেজি ভাষার দৈনিক ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’।
চিঠিতে লেখা হয়েছে:
ভারত সরকারের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে কাশ্মীরের সায়ত্ত্বশাসনের মর্যাদা তুলে নেওয়ার খবরে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। ভারতের এই একতরফা সিদ্ধান্ত কাশ্মীরের রাজনৈতিক মর্যাদা এবং তাদের স্ব-শাসনের অধিকারের ওপর সরাসরি আক্রমণ।
ভারতের সংবিধানে কাশ্মীরের সংশ্লিষ্টতার মূলে ছিল ৩৭০ অনুচ্ছেদ। এর মাধ্যমে আইনগতভাবে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা নিশ্চিত করা হয়েছিল। সে ধারা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে বিপজ্জনক পরিণতি দেখাদেবে। তাছাড়া, এ পদক্ষেপে ভারত এবং কাশ্মীরের জনগণের মধ্যে সাংবিধানিক সমাধানের ক্ষেত্রে বিশ্বাসঘাতকতাই প্রকাশ পেয়েছে।
আমরা এটাও লক্ষ্য করেছি যে, প্রধানমন্ত্রী মোদী দীর্ঘদিন থেকেই কট্টর-ডানপন্থি হিন্দু জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে মুসলিম বিদ্বেষী এবং যুদ্ধংদেহী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছেন।
তার প্রশাসন একমাত্র মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্যের স্বায়ত্বশাসন কেড়ে নিয়ে ভারতের আইনি এবং সাংবিধানিক ভিত মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব হিসাবে আমরা জরুরি ভিত্তিতে আপনাকে (অ্যান্তোনিও গুতেরেস) আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুতর হুমকি হিসাবে বিষয়টিকে দ্রুত নিরাপত্তা পরিষদের দৃষ্টিতেআনার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
আমরা লক্ষ্য করেছি, কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব মাত্র দু’মাস আগেও দেশ দুটিকে প্রায় যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছিল। তাদের হাতে পারমাণবিক অস্ত্রও আছে। তাই এখনকার এই চরম উদ্বেগজনক এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য আমরা জাতিসংঘকে তার ক্ষমতাবলে যাকিছু করা সম্ভব তা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
কাশ্মীরী জনগণের ওপর ভারত সরকারের কড়াকড়ির কথা উল্লেখ করে চিঠিতে আরো বলা হয়, ভারতীয় সেনারা সেখানকার রাস্তায় রাস্তায় পাহারা দিচ্ছে। এ পদক্ষেপ রুখে দিয়ে কাশ্মীরি জনগণের স্বায়ত্তশাসন এবং অধিকারের সুরক্ষা দিতে সম্ভাব্য সবকিছু করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব।