ভারতে কৃষি ঋণ মওকুফ ও আদিবাসী কৃষকদের জমি ফেরত দেওয়াসহ নানা দাবিতে মুম্বাইয়ের রাস্তায় আন্দোলন করছেন ৩৫ থেকে ৫০ হাজার কৃষক।
Published : 12 Mar 2018, 06:45 PM
সোমবার সকালে তারা মুম্বাইয়ের রাস্তায় জড়ো হন। খাবার, জুতা ও ফুল হাতে আন্দোলনরত কৃষকদের ‘লাল সমুদ্রকে’ স্বাগত জানিয়েছে মুম্বাইবাসী। তাদের এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও।
সাধারণ মানুষের উদ্যোগে কৃষকদের জন্য লরি বোঝাই করে খাবার ও পানি আনা হয়। বিভিন্ন সংগঠনও খাবার ও পানি বিতরণ করেছে। কোথাও কোথাও রাস্তার পাশে পানির ট্যাংক বসানো হয়েছিল।
মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে গত ৬ মার্চ ২৫ হাজার কৃষক যাত্রা শুরু করেন। পথে দলে দলে আরও অনেক মানুষ ‘কৃষাণ লং মার্চে’ যোগ দেন।
প্রায় ১৮০ কিলোমিটার পথ হেঁটে রোববার কৃষকদের দলটি থানে-মুম্বাই সীমান্তে পৌঁছালে তাদের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৩৫ হাজার হয়। তবে পরে এ সংখ্যা আরো বেড়ে ৫০ হাজারে পৌঁছেছে বলে দাবি আন্দোলনের আয়োজকদের।
বাম ধারার অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভা (এআইকেএস) এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে। এখনও দলে দলে অনেকে আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন। সোমবার ভোর থেকেই আজাদ ময়দানে যাত্রা শুরু করেন তারা।
বিবিসি জানায়, প্রাদেশিক সরকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত আছে।
ওদিকে, সরকার দাবি না মানা পর্যন্ত ‘আজাদ ময়দান’ না ছাড়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন কৃষক নেতারা।
কৃষিঋণ মওকুফ করা ছাড়াও কৃষকরা তাদের পণ্যের দাম দেড়গুণ বাড়ানোর দাবি করেছে। ভারতে সরকার কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়।
কৃষক নেতা বিজয় জাভান্ধিয়া বিবিসি’কে বলেন, “আমাদের দেশে কৃষি আয় খুব দ্রুত কমে গেছে। তুলা, শস্য ও ডাল চাষ থেকে আয় দিন দিন কমছে। যে কারণে গ্রামের মানুষদের হাতে কোনো অর্থ থাকছে না।”
সাখুবাই নামে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধা বলেন, “আমরা আমাদের জমি ফেরত চাই। এটিই আমাদের মূল দাবি। এত দূর হাঁটার কারণে আমার পা ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমি আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
কৃষক নেতাদের একজন ধর্মরাজ সিন্দে। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের জমির জন্য লড়াই করছি। সরকারের উচিত জমিতে আমাদের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া। কারণ, আদিবাসী হিসেবে এটি আমাদের অধিকার।”