ওজন কমানোর চিকিৎসা নিতে ভারতে যাওয়া ‘বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ওজনের’ নারী মিশরের ইমান আব্দুলাতির ওজন কমা নিয়ে চিকিৎসকরা মিথ্যাচার করছেন বলে দাবি করেছেন ইমানের বোন।
Published : 25 Apr 2017, 08:10 PM
মুম্বাইয়ের সাইফি হাসপাতালে ইমানের চিকিৎসা চলছে। মার্চে তার ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি (ওজন কমানোর জন্য পাকস্থলিতে বিশেষ ধরনের অস্ত্রোপচার) হয়েছে। চিকিৎসার পর ৫০০ কেজির বেশি ওজনের ইমানের ওজন প্রায় ২৫০ কেজি কমেছে বলে দাবি ভারতীয় চিকিৎসকদের।
কিন্তু ইমানের বোন বলছেন, একথা সত্য নয় এবং তার বোনের এখন যে অবস্থা তাতে যে কোনো সময় তার স্ট্রোক হতে পারে। ক্ষোভের সঙ্গে ইমানের বোনের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিবিসি জানায়, সোমবার ইমানের বোন শাইমা সেলিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে তার বোনের ওজন কমা নিয়ে মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ তোলেন। ভিডিওতে তিনি বলেন, তার বোন এখনও কথা বলা বা নড়াচড়া করতে পারছেন না।
মঙ্গলবার বিবিসি’কে এ বিষয়ে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাইমা বলেন, তার বোনের বর্তমান ওজন নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিথ্যাচার করেছে।“তিনি (ইমানের প্রধান চিকিৎসক ডা. মুফ্ফাজল লাকদাওয়ালা) আগে বা পরে কখনওই আমার বোনের ওজন মাপেননি। যদি তার কাছে ইমানের ওজন কমার কোনও প্রমাণ থাকে তবে আমাদেরকে তার আগের ও পরের ওজনের ভিডিও দেখান।”
বোনের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে শাইমা বলেন, “তার শরীরে অক্সিজেন ঠিকমত কাজ করতে পারে না। তাকে প্রায় সব সময়ই একটি অক্সিজেন মাস্ক পরে থাকতে হয়। তার নাকের ভেতর দিয়ে একটি টিউব ঢুকিয়ে পাকস্থলিতে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কারণ সে মুখে কিছু খেতে বা পান করতে পারে না।”
এ বিষয়ে বিবিসি’র পক্ষ থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, সর্বশেষ সোমবার ইমানের ওজন মাপা হয়েছে। বর্তমানে তার ওজন ১৭২ কেজি। ডা. মুফ্ফাজলও এক টুইটে ইমানের বোনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অতিরিক্ত ওজনের কারণে মাত্র ১১ বছর বয়সে ইমানের স্ট্রোক হয় এবং গত ২৫ বছর ধরে তিনি ঘরের বাইরে পা রাখেননি। জানুয়ারিতে বিশেষ বিমানে করে মিশর থেকে ভারতের মুম্বাইয়ে আনা হয় ইমানকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ইমান এখন হুইল চেয়ারে বসার উপযুক্ত এবং দীর্ঘসময় বিছানায় বসে থাকতে পারেন।
ওজন কমানোর অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতাল থেকে ইমানের নতুন ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইমানের চিকিৎসা প্রায় শেষের পথে এবং শিগগিরই তাকে আলেক্সান্দ্রিয়া পাঠি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যা নিয়ে শাইমা ক্ষুব্ধ।
বিবিসি’কে শাইমা বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য অংশেও এ ধরনের ঘটনা আছে। আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশে অতিরিক্ত ওজনের মানুষ আছে। তাদের এক থেকে দুই বছর হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করা হয় এবং ওজন কমিয়ে তারা স্বাভাবিক জীবন ফিরে পায়।”
“কিন্তু এখানে মাত্র এক থেকে দুই মাস চিকিৎসার পরই আমার বোনকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে বলা হচ্ছে। আমি তাদের বলেছি, কেন? এখনও তার ওজন অনেক বেশি, যদি মিশরে যাওয়ার পর তার কিছু হয় আমি কিভাবে তাকে এখানে হাসপাতালে নিয়ে আসব। মিশরের কেউ আমাকে সাহায্য করবে না। আমি তাদের বলেছি, দয়া করে তাকে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে রাখুন এবং ওজন কমাতে সাহায্য করুন।”