ইরাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শেষ বড় শক্তিকেন্দ্র মুসলে অগ্রযাত্রা ধরে রেখেছে সরকারি বাহিনী, কিন্তু দেশটির তাইগ্রিস নদীতীরের আরেক শহর তিকরিতের কাছে জঙ্গিদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২০ জন নিহত হয়েছেন।
Published : 09 Mar 2017, 12:20 PM
বুধবার তিকরিতের কাছে হাজ্জাজ গ্রামে একটি বিয়ের আসরে বোমা হামলাগুলো হয়, যাকে আত্মঘাতী হামলা বলে বর্ণনা করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের কর্মীরা।
তাৎক্ষণিকভাবে হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী। তবে এর আগে আইএস যতবারই চাপে পড়েছে, এ ধরনের আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিয়ের আসরে দুটি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে আরো দুটি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
ওই এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ওদিকে মসুলে আইএসের জঙ্গিদের সঙ্গে ইরাকি বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে।নিজেদের ঘাঁটি ধরে রাখার মরিয়া চেষ্টায় বেসামরিক জনগণের সঙ্গে মিশে থাকা জঙ্গিরা আত্মঘাতী গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও লক্ষ্যভেদীদের মোতায়েন করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার ইরাকের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ইরাকি সামরিক বাহিনী বরাতে জানানো হয়েছে, সেনাবাহিনী ও শিয়া বেসামরিক বাহিনী মসুল থেকে পশ্চিম দিকে চলে যাওয়া অবশিষ্ট প্রধান সড়কটিরও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে।
সড়কটি মসুল থেকে আইএসের আরেক ঘাঁটি তাল আফার হয়ে সীমান্তের ওপারে সিরিয়া পর্যন্ত চলে গেছে। মসুলের পতন হলে পশ্চিমের এই পথগুলো ধরেই আইএস জঙ্গিরা ৬০ কিলোমিটার দূরের তাল আফারে পালিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
সেনাবাহিনীর নবম সাঁজোয়া ডিভিশন ও শিয়া যোদ্ধাদের দুটি দল পশ্চিম মসুলকে তাল আফার থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে বলে জানিয়েছে সামরিক বাহিনী।
মসুল অভিযানে অংশ নেওয়া শিয়া বেসামরিক বাহিনীগুলো ডিসেম্বর থেকে তাল আফারের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করেছে। তারা কুর্দি যোদ্ধাদের সঙ্গে মিলে তাল আফার ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে।
পশ্চিম মসুলের অভিযানে ইরাকি বাহিনী এখন শহরটির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় উপস্থিত হয়েছে। এই এলাকায় মসুলের পুরনো শহরও রয়েছে। এখানে জঙ্গিদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর কঠিন লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাতে মসুলের সরকারি ভবন কমপ্লেক্স এলাকায় সরকারি বাহিনীকে লক্ষ্য করে গাড়িবোমা হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সহায়তায় শুরু হওয়া মসুলে অভিযানে জানুয়ারিতে পূর্ব মসুল পুনরুদ্ধার করে ইরাকি বাহিনী। ১৯ ফেব্রুয়ারি তাইগ্রিস নদীর অপর পাড়ে পশ্চিম মসুল পুনরুদ্ধারে অভিযান শুরু করে তারা।
পশ্চিম মসুলের পুরনো শহরের আল নুরি মসজিদ থেকেই ইসলামি স্টেটের (আইএস) ‘খিলাফতের’ ঘোষণা দিয়েছিলেন জঙ্গিগোষ্ঠীটির প্রধান আবু বকর আল বাগদাদি।