চলতি বছর অগাস্ট থেকে ঢাকায় নিজেদের আরঅ্যান্ডডি সেন্টার বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ডিজিটাল মিডিয়া খাতে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ভিজআরটি।
Published : 02 Apr 2017, 07:18 PM
‘কৌশলগত কারণে’ প্রতিষ্ঠানটি এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান ভিজআরটি বাংলাদেশ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আরঅ্যান্ডডি প্রধান মাহমুদুল হক আজাদ।
প্রতিষ্ঠানটির নাম নেওয়া হয়েছে ‘ভিজুয়াল রিয়াল টাইম’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ থেকে।
লন্ডন অলিম্পিক গেইমস, ইউরো ২০১২ আর ২০১২ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গ্রাফিক, ভিডিও আর অনলাইন টুল সরবরাহ করেছিল ভিজআরটি। সে বছর মার্কিন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব প্রধান গণমাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের গ্রাফিক্স ও ভিডিও টুল ব্যবহৃত হয়।
কেন বাংলাদেশ থেকে প্রতিষ্ঠানটি তাদের আরঅ্যান্ডডি সেন্টার সরিয়ে নিচ্ছে জানতে চাইলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-কে আজাদ বলেন, “কৌশলগত কারণেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, থাইল্যান্ড ও ইসরায়েল থেকেও আরঅ্যান্ডডি সেন্টার গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে।” সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে নিরাপত্তা উদ্বেগ ও ব্যবসায়ের খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানটি এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে খবর প্রকাশিত হলেও এ খবরের সঙ্গে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেন তিনি। এই “পুরানো কথাগুলো সত্য নয়” বলেই মন্তব্য তার। এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের গ্রাহকদের উপর কেমন প্রভাব পড়বে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে শুধু আরঅ্যান্ডডি সেন্টার পরিচালনা হয়ে আসছিল, এর সঙ্গে গ্রাহক সেবার কোনো সম্পর্ক নেই।”
এ বিষয়ে বেসিস সভাপতি মোস্তফা জব্বার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-কে বলেন, “এটি তো প্রথম ঘটনা না। এর আগে স্যামসাং বাংলাদেশ থেকে তাদের আরঅ্যান্ডডি সেন্টার তুলে নিয়েছে। এখন প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে না জানলে তারা কেন চলে যাচ্ছে সে বিষয়ে মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তবে, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো এদেশে আসার পর তাদের আরঅ্যান্ডডি সেন্টার তুলে নেওয়ার বিষয়টি ভালো নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর কারণ হচ্ছে আমরা সম্ভবত তাদের যথেষ্ট দক্ষ জনশক্তি দিতে পারছি না। এ কারণে আইটি সেক্টরে আমাদের ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষতি হচ্ছে।”
২০১০ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে ভিজআরটি। প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ কার্যালয়ে ৪৫ জন প্রকৌশলী কাজ করছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি রিয়াল-টাইম ৩ডি গ্রাফিক্স ও মানচিত্র, সাংবাদিকদের বিভিন্ন সফটওয়্যার, স্টুডিও অটোমোশন, মিডিয়া সম্পদ ব্যবস্থাপনার মতো সেবা দিয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী শতাধিক দেশে নিজেদের সেবা দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এ প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক তালিকায় রয়েছে সিএনএন, সিবিএস, ফক্স, বিবিসি, আল জাজিরা, আইটিএন, স্টার টিভি, সিসিটিভি-এর মতো মিডিয়া প্রতিষ্ঠান।
এর আগেও বাংলাদেশ থেকে এমন বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে দেশের নিরাপত্তা উদ্বেগ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর ব্যবসায় খরচ বেড়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলো বারবার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।