মাত্র ১৮ বছর বয়সে স্বপ্নাতুর চোখে রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি জমানো ভিনিসিউস জুনিয়রের পরের সময়টা আশানুরূপ কাটেনি। কোচের সুনজরে থাকায় নিয়মিত খেলার সুযোগ পেলেও নিজেকে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন বারবার। অবশেষে যেন নিজের সেরাটা খুঁজে পেতে শুরু করেছেন ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ড। নতুন মৌসুমে প্রথম চার ম্যাচে চারটি গোল করার পর আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে তিনি বললেন, বিশ্বাস ছিল যে গোল আসবেই।
Published : 14 Sep 2021, 09:56 PM
গতিতে প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভেঙে এগিয়ে যাওয়ায় দারুণ পারদর্শী তিনি। বল পায়ে কারিকুরিতেও কম যান না। তবে ডি-বক্সে ঢোকার পরই কী যেন হয়, খেই হারিয়ে ফেলেন। তার ফিনিশিংয়ে দুর্বলতাও বেশ দৃষ্টিকটু। তার গত তিন মৌসুমের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করলে বেরিয়ে আসে এই ঘাটতিগুলো।
তবে ২০২১-২২ মৌসুমের শুরু থেকেই নতুন ভিনিসিউসের দেখা মিলতে শুরু করেছে। আলাভেসের বিপক্ষে লা লিগায় নিজেদের প্রথম ম্যাচের যোগ করা সময়ে জালের দেখা পান তিনি। নাটকীয়তায় ভরা পরের ম্যাচে লেভান্তের বিপক্ষে তার জোড়া গোলেই হার এড়ায় রিয়াল, ম্যাচটি ৩-৩ ড্র হয়। মাঝে এক ম্যাচ বিরতিতে গত রোববার সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে দলের ৫-২ ব্যবধানের জয়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করেন ২১ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়। একটি গোলও করেন।
সেল্তার বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল রিয়ালের জন্য বিশেষ উপলক্ষ; ৫৬০ দিন পর সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে ফেরে ক্লাবটি। মাঠের সংস্কার কাজ শুরুর আগে ২০২০ সালের ১ মার্চ এখানে সবশেষ খেলেছিল রিয়াল। ওই ম্যাচেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছিলেন ভিনিসিউস; বার্সেলোনার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানের জয়ে প্রথম গোলটি করেছিলেন তিনি। প্রিয় আঙিনায় ফেরার ম্যাচেও দর্শকদের মন জয় করেছেন ভিনিসিউস।
পুরনো ব্যর্থতা পেছনে ফেলে নতুন শুরুর লগ্নে এএস-কে মঙ্গলবার দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন ভিনিসিউস। জানান, মাঠের সময়টা খারাপ কাটলেও নিজের ওপর তার সবসময়ই পূর্ণ বিশ্বাস ছিল।
“আমি জানতাম গোল একসময় আসবেই।”
এ বিষয়ে হাসিমুখে ভিনিসিউস বললেন, “আশা করি, এখন নিয়মিত গোল করে যাব, অনেক গোল। তাকেও অনেক গোল করতে সাহায্য করব।”
এই চার ম্যাচে গোলের উদ্দেশে ভিনিসিউস মোট ১০টি শট নেন, যার চারটিতে মেলে সাফল্য। প্রায় প্রতি দুই শটে একটি গোল। এককথায় অসাধারণ!
রিয়ালে বরাবরই ভীষণ জনপ্রিয় ভিনিনিউস। সেল্তা ম্যাচেও দেখা যায় তেমনই এক দৃশ্য; গোল করার পর এক ছুটে সমর্থকদের মাঝে চলে যান তিনি। তারাও তাকে জড়িয়ে ধরে। এই মাঠে ক্লাব সমর্থকদের থেকে দুয়ো শুনেছেন জিনেদিন জিদান, এমনকি ক্রিস্তিয়ানা রোনালদোও। কিন্তু ভিনিসিউসের ক্ষেত্রে চিত্রটা ভিন্ন।
সাক্ষাৎকারের শুরুতেই ওঠে বিষয়টি। জবাবে ভিনিসিউস বলেন, হয়তোবা তার খেলার ধরনের কারণেই মানুষ তাকে ভালোবাসে।
“এটা এমন কিছু যা নিয়ে আমি গর্ববোধ করি। আমার বিশ্বাস, আমার খেলার ধরনের কারণে তারা আমাকে ভালোবাসে। আমি প্রতিপক্ষের সঙ্গে বলের লড়াই পছন্দ করি। আর যদি ব্যর্থ হই, তাহলে আবার চেষ্টা করি। আশা করি, এই ভালো সম্পর্ক আরও অনেক বছর টিকে থাকবে।”