চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সফলতম দল রিয়াল মাদ্রিদ। অন্যদিকে, এবারই প্রথম শেষ চারে উঠল ম্যানচেস্টার সিটি। অভিজ্ঞতার বিচারে ভিন্ন মেরুর দল দুটি মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে।
Published : 25 Apr 2016, 10:24 PM
সম্ভাবনায় এগিয়ে জিনেদিন জিদানের দল, নাটকীয়ভাবে লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে ফেরার আত্মবিশ্বাসও সঙ্গী তাদের। কিন্তু ইপিএলের দলটাকে অবহেলা দেখানোর উপায় নেই ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো-গ্যারেথ বেলদের।
দুই পর্বের এ লড়াইয়ে প্রথম ম্যাচ ঘরের মাঠে প্রিয় সমর্থকদের সামনে খেলার সুবিধা পাবে সিটি। মঙ্গলবার ইতিহাদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে একটায় শুরু হবে ম্যাচটি।
১০ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী রিয়াল বরাবরের মতো এবারও আসরের শুরু থেকেই ছুটছে দুরন্ত গতিতে। গ্রুপ পর্বে অপরাজিত থেকে শেষ ষোলোতে দুই লেগেই জিতে তারা। কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে ভলফসবুর্গের মাঠে ২-০ গোলে হেরে বসলেও নিজেদের মাঠে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩-০ ব্যবধানে জিতে যায় সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ের দল।
অন্যদিকে, চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠা সিটি গ্রুপ পর্বে ছয় ম্যাচের দুটিতে হেরেছিল। শেষ ষোলোর দুই লেগ মিলে সহজেই জিতলেও কোয়ার্টার-ফাইনালে ভালোই লড়তে হয়েছে তাদের; পিএসজির মাঠে প্রথম লেগ ২-২ গোলে ড্র করার পর ঘরের মাঠে একমাত্র গোলে জিতে ইতিহাস গড়ে তারা।
গত পাঁচ বছরে দুবার ইপিএলের শিরোপা জিতলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পায়ের নীচে মাটি পাচ্ছিল না সিটি; গত দুই আসরে শেষ ষোলো থেকে ছিটকে পড়ার আগের মৌসুমে গ্রুপ পর্বের বাধাই পেরুতে পারেনি তারা।
ইউরোপ সেরার মঞ্চে অনভিজ্ঞতা তাই রিয়ালের বিপক্ষে বড় এক ঘাটতি হতে পারে মানুয়েল পেল্লেগ্রিনির দলের। আবার উল্টোটাও হতে পারে; শেষ চারে উঠে এরই মধ্যে ইতিহাস গড়া সিটি চাইবে দুর্দান্ত এ যাত্রাকে আরেক ধাপ সামনে নিতে। সেখানে ‘হারানোর কিছু নেই’ মন্ত্রে উজ্জ্বীবিত হলে রিয়ালকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলতে পারে ইংল্যান্ডের ক্লাবটি।
“আমরা জানি, শুধু খেলোয়াড়দের জন্যই নয়, সমর্থকদের জন্যও ম্যাচটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ক্লাবের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা ম্যাচ। ম্যাচটি খেলতে আমরা দারুণ উত্তেজিত। আশা করি এরপর মাদ্রিদেও (ফিরতি লেগে) আমরা ভালো করব।”
সিটির নতুন ইতিহাস গড়ার পথে বড় বাধা হতে পারেন দারুণ ফর্মে থাকা রোনালদো। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ ১৬টি গোল করেছেন তিনি।
তবে তিনবারের বর্ষসেরা তারকা রোনালদো নিয়ে তেমন ভাবছেন না পেল্লেগ্রিনি। ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ভিয়ারিয়ালের কোচ হিসেবে বেশ কয়েকবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। ওই সময় ইংল্যান্ডের দলটিতে ছিলেন রোনালদো।
ওই সময়ের স্মৃতি হাতড়ে পেল্লেগ্রিনি বলেন, “চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আমরা তাদের সঙ্গে চারবার খেলেছিলাম এবং প্রতিবার স্কোর ছিল ০-০। সুতরাং রক্ষণাত্মকভাবে নিশ্চিতভাবেই আমরা সঠিক কিছু করেছিলাম।”
রিয়ালের ফরোয়ার্ড গ্যারেথ বেল অবশ্য যেকোনো ভাবে প্রতিপক্ষের মাঠে গোল করতে মরিয়া।
“আমার মতে, অ্যাওয়ের ম্যাচে গোল করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে আমরা খুব শক্তিশালী এবং অবশ্যই আমরা অনেক সুযোগ পাব। ওখানে না হারা পর্যন্ত আমরা বের্নাবেউয়ে খুব আত্মবিশ্বাসী থাকব।”
বড় মঞ্চে অভিজ্ঞতার মতো মুখোমুখি লড়াইয়েও পিছিয়ে সিটি। ২০১২-১৩ মৌসুমে গ্রুপ পর্বে নিজেদের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করলেও ফিরতি পর্বে বের্নাবেউ থেকে ৩-১ গোলে হেরে ফিরেছিল সিটি।
গুরুত্বপূর্ণ এ লড়াইয়ের আগে দুটি দলেই আছে চোট সমস্যা। পায়ের পেশির চোটে খেলতে পারবেন না সিটির কোত দি ভোয়ার মিডফিল্ডার ইয়াইয়া তুরে। আর রিয়ালের আক্রমণভাগের অন্যতম সেরা তারকা করিম বেনজেমা খেলা অনিশ্চিত, লিগে গত ম্যাচে হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছিলেন তিনি। কোচ জিদান অবশ্য স্বদেশি শিষ্যকে ফিরে পেতে আশাবাদী।