যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক বাড়াতে গুরুত্ব দুই মার্কিন আইনপ্রণেতার

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন দুই মার্কিন আইনপ্রণেতা।

বুধবার ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল হিলে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক বৈঠকে মার্কিন সেনেটর টেড ক্রুজ (রিপাবলিকান-টেক্সাস) এবং কংগ্রেসম্যান স্টিভ শ্যাবোট (রিপাবলিকান-ওহাইয়ো) এ বিষয়ে তাদের আগ্রহের কথা বলেন।

জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক এবং কাজী নাবিল আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহিদুল ইসলাম ছিলেন এই প্রতিনিধি দলে।

দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার এ জেড এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, বৈঠকে সংসদীয় প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপারে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অবহিত করেন। বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কোভিড-১৯ দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার আরও উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যে মানবিকতা দেখিয়েছে, সে কথা তুলে ধরে রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারকে সম্ভাব্য সব উপায় রাজি করাতে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অনুরোধ জানান তারা।

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় মার্কিন আইনপ্রণেতারা বাংলাদেশর উদারতার প্রশংসা করেন। তারা এ সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।”

বাংলাদেশকে ৬৪ মিলিয়ন ডোজ কোভিড-১৯ টিকা অনুদান হিসেবে দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রশংসা করে সংসদীয় প্রতিনিধিদল।

ব্যবসাবান্ধব বাংলাদেশের বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় খাতে আরও মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান তারা পৌঁছে দেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের কাছে। 

বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাইলফলক অর্জনের কথা তুলে ধরে ফারুক খান এক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য টেক্সাসভিত্তিক মার্কিন জ্বালানি কোম্পানিগুলোর প্রশংসা করেন।

উভয় পক্ষই আগামী দিনে দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার আরও সম্প্রসারণ ও বহুমুখী অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন বলে জানান দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার।

সেনেট কমিটির পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক সদস্য সেনেটর টেড ক্রুজ দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর জোর দেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে টেক্সাস রাজ্য জ্বালানি খাতে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে প্রত্যার্পণের জন্যও বাংলাদেশের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করেন বলে জানান দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার।

তিনি বলেন, “তারা র‌্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্যও যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের সমর্থন কামনা করেন। র‌্যাব চরমপন্থা, সন্ত্রাসবাদ এবং মাদক ও মানবপাচারসহ সীমান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসাধারণ অবদান রাখছে বলে জানান তারা।”

প্রতিনিধি দল কংগ্রেশনাল বাংলাদেশ-ককাসকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কংগ্রেসম্যানের সমর্থন চান। এশিয়া বিষয়ক প্রভাবশালী ইউএস হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স সাবকমিটির র‌্যাঙ্কিং সদস্য কংগ্রেসম্যান স্টিভ শ্যাবোট কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ার হিসেবে প্রস্তাবিত ককাসের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তার প্রস্তুতির কথা বলেন।

ককাস বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে সাহায্য করবে বলে আশা করেন তিনি।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!