রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাবার পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি দেশটিতে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার বিচারে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রে দুদিনের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
Published : 10 Feb 2019, 11:59 AM
স্থানীয় সময় শুক্র ও শনিবার দেশটির নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন প্রটেকশন অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি ইন বার্মা’ শিরোনামে এ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন’ (এফআরসি) নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
সম্মেলন শেষে শনিবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘ওয়ার্ল্ড রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন’।
‘ওয়ার্ল্ড রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন’ এর প্রেসিডেন্ট মহিউদ্দিন মোহাম্মদ ইউসুফের পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন এ সংস্থার কর্মকর্তা লুৎফর রহমান লাতু ও মশিউর রহমান।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারিদের মধ্যে ছিলেন ‘ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন’ এর সমন্বয়ক ও ‘আরকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন’ এর পরিচালক রাজিয়া সুলতানা, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কর্মরত সংগঠনের নেত্রী ইয়াসমীন উল্লাহ, ‘আরকান ইন্সটিটিউট ফর পিচ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ এর পরিচালক মোং মোং, যুক্তরাজ্যে ‘বার্মিজ কোয়ালিশন’ এর প্রেসিডেন্ট টং কিং এবং ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আসা রোহিঙ্গা মুসলমান মো. নূর।
সুলতানা রাজিয়া বলেন, “বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় আমরা সব সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ ১৮ কোটি মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে আমরা আশা করছি, শিবিরে অবস্থানকারি শিশু-কিশোররা যাতে শিক্ষার সুযোগ পায়। যুবক-যুবতীরা যাতে শরীরচর্চার সুযোগ পায়। কারণ, নিজ বসতভিটায় ফেরার জন্য প্রয়োজনে যাতে রুখে দাঁড়ানোর কথা ভাবতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকেই সোচ্চার রয়েছেন। অনেকে সাহায্য-সহায়তার হাত প্রসারিত করেছে। কিন্তু তা সমস্যা সমাধানে যথেষ্ঠ নয়। এজন্য কার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে বাংলাদেশকে।”
মো. নূর ক্ষোভ নিয়ে বলেন, “চীন ও ভারতের স্বার্থের দ্বন্দ্বের ভিকটিম হয়েছি রোহিঙ্গারা। এ দ্বন্দ্বের স্থায়ী সমাধানের জন্য বাংলাদেশকে আরও জোরালো ভূমিকায় অবতীর্ণ হবার বিকল্প নেই। রাজনৈতিক সংলাপের আয়োজন করতে হবে বাংলাদেশকে।”
টং কিং বলেন, “জাতিসংঘে দেনদরবার চলছে, ওআইসির ৫৭টি সদস্য রাষ্ট্রই সোচ্চার রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ প্রভাবশালী অনেক রাষ্ট্র মিয়ানমারের বর্বরতার বিপক্ষে। তবুও চরম বাস্তবতা হচ্ছে, এখনও রোহিঙ্গারা নির্যাতিত হচ্ছে। যারা আরকানে জীবন বাজি রেখে এখনও অবস্থান করছেন, তারা মানবেতর জীবন-যাপনে বাধ্য হচ্ছেন। ওষুধ কিনতে ফার্মেসিতেও যেতে পারেন না, হাসপাতাল তো দূরের কথা। এক গ্রামের রোহিঙ্গা মুসলমানরা নিকট প্রতিবেশী গ্রামে যাবার অনুমতি পাচ্ছেন না।”
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |