দেশে স্বজনদের কাছে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত উন্নয়ন সহায়তার তিনগুণ বেশি বলেছেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিনিধি লুইস আরবোর।
Published : 25 Jul 2017, 01:22 PM
স্থানীয় সময় সোমবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর সেফ, অর্ডারলি অ্যান্ড রেগুলার মাইগ্রেশন’- এর কন্সালটেশন পর্বে দু’দিনব্যাপী চতুর্থ থিমেটিক সেশনের প্রথম দিনে এ কথা বলেন লুইস আরবোর।
লুইস আরবোর বলেন, “গত বছর প্রবাসীরা নিজ নিজ দেশে ৪২৯ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনের পথে বিশেষ অবদান রেখেছেন। আর এ অর্থের পরিমাণ হচ্ছে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত উন্নয়ন সহায়তার তিনগুণ বেশি। বেসরকারিভাবে অর্থনৈতিক স্থিতি অর্জনের পথে এই রেমিটেন্স প্রক্রিয়ার ভূমিকা অপরিসীম।”
লুইস আরবোর আরও উল্লেখ করেন, “রেমিটেন্সের প্রভাব পড়েছে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোতে। বহু মানুষকে দরিদ্রসীমার ওপরে উঠতে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে উন্নয়নশীল বিশ্বে। এ কারণে রেমিটেন্সের ফি একেবারেই কমিয়ে ফেলা উচিত এবং প্রবাসীদের মানবাধিকার প্রশ্নেও উন্নত দেশগুলোর সজাগ হওয়ার বিকল্প নেই।”
সেশনে ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন’ তথা ওআইএম -এর মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি সুইং বলেন, “অভিবাসী শ্রমিকদের পাঠানো অর্থে অনেক দেশই তার উন্নয়ন-পরিকল্পনা তৈরি করছে। এজন্যে অভিবাসীদের মানবাধিকার প্রশ্নে সকলকে সোচ্চার থাকা জরুরী। একইসাথে মূলধারার সকল কার্যক্রমেই অভিবাসীদের সম্পৃক্ততাও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।”
‘টেকসই উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে অভিবাসীদের অবদান: অভিবাসন ও উন্নয়নের যোগসূত্র’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত প্যানেল ১-এর আলোচনায় অংশ নিয়ে এমপি মাহজাবিন খালেদ এসডিজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সামষ্টিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নারী অভিবাসীদের উপার্জন সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা তুলে ধরেন। এ ক্ষেত্রে তিনি প্রচলিত সামাজিক সংকীর্ণতা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী আইন-কানুনের উর্ধ্বে উঠে বিশ্ব সম্প্রদায়কে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্যানেল ২-এর প্রতিপাদ্য ছিল ‘টেকসই উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে অভিবাসী ও প্রবাসীদের অবদান: সহায়ক পরিকাঠামো নির্মাণ’। মো.ইসরাফিল আলম এমপি এ সেশনে অংশ নিয়ে প্রবাসী কমিউনিটির জন্য দেশে বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা এবং তাদের পাঠানো রেমিটেন্সের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ব্যবহারের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
উভয় সংসদ সদস্য প্রস্তাবিত গ্লোবাল মাইগ্রেশন কমপ্যাক্টের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠাতে খরচ কমানো, পাঠানো রেমিটেন্সের নিরাপত্তা বিধান, অভিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণ, বৈষম্য দূরীকরণ, সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং উন্নয়নের মূলধারায় অভিবাসী ও প্রবাসী কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |