“এইডস আক্রান্তদের একটি বড় অংশ মাদকসেবী এবং ট্রান্সজেন্ডার । তারা চিকিৎসা নিতে গিয়ে অবহেলার শিকার হন।”
Published : 04 Dec 2022, 01:18 AM
বাংলাদেশে এইডস আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করে তাদের সবাইকে চিকিৎসাসহ সামাজিক বেস্টনীতে আনার দাবি জানানো হয়েছে এক সেমিনারে।
কমিউনিটি ফোরাম অব বাংলাদেশ শনিবার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে ‘এইচআইভি এইডসে আক্রান্ত ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।
এইডস আক্রান্তদের ওষুধের পাশাপাশি অন্যান্য চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য ও বৈষম্যহীন করা, তাদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করা, হয়রানি ও বৈষম্যমূলক আচরণ পরিহার করা, তাদের জন্য বৃত্তিমূলক ও মানানসই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয় সেমিনারে।
ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. আবু তাহের বলেন, এইডস আক্রান্তদের একটি বড় অংশ মাদকসেবী এবং ট্রান্সজেন্ডার । তারা চিকিৎসা নিতে গিয়ে অবহেলার শিকার হন।
“তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের প্রতি আমাদের অনেক অবহেলা রয়েছে। অনেক সময় তারা অসুস্থ হলে আমরা তাদের হাসপাতালেও ঢুকতে দিই না। আর যদি এইডস আক্রান্ত হয়ে আসে তাহলে তো কথাই নেই। এসব বিষয়ে আমাদের আরও ভাবতে হবে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যের বরাত দিয়ে ইউএনএইডসের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সায়মা খান বলেন, গত এক বছরে দেশে ৯৪৭ জন নতুন এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাদের ১৮ শতাংশ বিদেশে কর্মরত অভিবাসী শ্রমিক।
“এইডস আক্রান্তরা কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। আত্মীয়স্বজন যখন জানবেন যে আমি এইচআইভি পজিটিভ, তারা আমার সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করবেন না।
“নারী অভিবাসী কর্মীরা কাজ করতে গিয়ে ভয়াবহ সমস্যা পার করে আসেন। তাদের মধ্যে এইচআইভিতে আক্রান্ত বেড়ে চলেছে। ফিরে এলে তারাও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হন।”
বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, এইডস আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও এ নিয়ে গণমাধ্যমগুলো সঠিক তথ্য পাচ্ছে না। অনেক সময় কর্তৃপক্ষও এসব নিয়ে তথ্য গোপন করে, যে কারণে জটিলতা তৈরি হয়।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল। ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের উপ পরিচালক জাহিদ অনোয়ার, ওকাপের চেয়ারপার্সন ও কমিউনিটি ফোরাম অব বাংলাদেশের আহ্বায়ক শাকিরুল ইসলাম সভায় উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ১২ লাখ ৪১ হাজার ৬২৫ জনের এইচআইভি পরীক্ষা করে নতুন ৯৪৭ জন রোগী শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে ১২৮ জন রোহিঙ্গা।
দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত এইডস রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ৭০৮ জন।