বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন খাতের আয় থেকে সরকারকে মূল্য সংযোজন কর- মূসক বা ভ্যাট পরিশোধে অবশেষে ফেইসবুক বাংলাদেশে সরাসরি ভ্যাট নিবন্ধন নিয়েছে।
Published : 13 Jun 2021, 07:35 PM
ভ্যাট গোয়েন্দাদের নজর ফেইসবুকভিত্তিক ব্যবসায়
রোববার বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির তিনটি প্রতিষ্ঠান বিআইএন হিসেবে পরিচিত ব্যবসায় নিবন্ধন নম্বর নেওয়ার মাধ্যমে নিবন্ধনের এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।
ফেইসবুকের আগে ২৫ মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরে ভ্যাট নিবন্ধন করেছিল আরেক টেক জায়ান্ট গুগল।
অনিবাসী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যে তিন নামে ফেইসবুক নিবন্ধন নিয়েছে, সেগুলো হল- ফেইসবুক আয়ারল্যান্ড লিমিটেড, ফেইসবুক পেমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ও ফেইসবুক টেকনোলজিস আয়ারল্যান্ড লিমিটেড।
ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কার্যালয়ে ভ্যাটের নিবন্ধন করেছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান এই কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার প্রমিলা সরকার।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোববার ফেসবুকের তিনটি প্রতিষ্ঠান সরাসরি ভ্যাট নিবন্ধন নিয়েছে।
“বাংলাদেশে ফেসবুকের এজেন্ট ভ্যাট নাম্বার ১০০০০৪।“
এর আগে ফেসবুক স্থানীয় অথরাইজ সেলস পার্টনার (এএসপি) এর মাধ্যমে ভ্যাট প্রদান করত বলে জানান ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনাটের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।
এখন এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে পিডব্লিউসি (প্রাইস ওয়াটারহাউজ কুপার)।
এর আগে ফেইসবুক এএসপির মাধ্যমে সরাসরি ৯ কোটি ৩০ লাখ টাকার ভ্যাট পরিশোধ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এছাড়া ব্যাংকের মাধ্যমেও ভ্যাট পরিশোধ করেছে, যে হিসাব আমরা এখনো পাইনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আমরা হিসাবটা চেয়েছি। শিগগির তা জানা যাবে।“
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর আগে ২০১৯ সালের ২৬ জুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আদায়ের জন্য বাংলাদেশে ফেইসবুক, গুগল ও ইউটিউবের মতো ইন্টারনেট সেবা এবং বেতার-টেলিভিশনে সম্প্রচার সেবাদাতা অনাবাসীদেরকে প্রতিনিধি নিয়োগ দিতে হবে বলে সার্কুলার জারি করেছিল।
মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ অনুযায়ী করযোগ্য আমদানি ও করযোগ্য সরবরাহের উপর ১৫ শতাংশ হারে মূসক কাটা হবে।
এর আগে হাই কোর্ট এক আদেশের পর ওই বছর ২২ জানুয়ারি গুগল, ফেইসবুক, ইউটিউবের মতো ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ থেকে দেওয়া বিজ্ঞাপনের উপর ভ্যাট আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চিঠি দেয় এনবিআর।
ওই চিঠিতে ফেইসবুক ও ইউটিউবের মতো ইন্টারনেট যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপনদাতারা যে অর্থ পরিশোধ করেন, তা থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কেটে সরকারি কোষাগারে জমা করতে ব্যাংকগুলোকে বলা হয়।
ফেইসবুক-ইউটিউবে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বিজ্ঞাপনের অর্থের বেশিরভাগই অবৈধ পথে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি, ফলে এখাত থেকে দেশ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এই অর্থ সরকারি কোষাগারে আনতে অনেক দিন চেষ্টা চালাচ্ছে এনবিবআর।