সাধারণ মানুষের খরচ করার সক্ষমতা ‘রয়েছে’ বলেই মোবাইল সেবায় বাড়তি হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
Published : 12 Jun 2020, 08:09 PM
বাজেটের পরদিন শুক্রবার অর্থমন্ত্রীর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রীর পক্ষে উত্তর দিতে গিয়ে এ কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
অর্থমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন, তাতে মোবাইল সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে।
এর ফলে মোবাইল ফোনে কথা বলা, এসএমএস পাঠানো এবং ডেটা ব্যবহারের খরচ বেড়েছে। বাজেটে ঘোষণা আসার পর এনবিআর এসআরও জারি করায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই বাড়তি হারে টাকা কাটা শুরু করেছে দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো।
করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে মোবাইল ফোন ও মোবাইল ডেটার ওপর মানুষের নির্ভরতা যখন বেড়েছে, তখন সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নিয়ে অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। মন্ত্রী তখন এনবিআর চেয়ারম্যানকে এর উত্তর দিতে বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের মেইন সমস্যা হল- কোন কিছুর যদি ডিউটি বাড়ানো হয়, তখন ২ পয়সা বাড়ানো হল না দুই টাকা বাড়ানো হল সেটুকু বিবেচনা না করে প্রথমেই আপত্তি আসে ডিউটি বাড়ানো নিয়ে।
“সেই একইভাবে মোবাইল চার্জের বিষয়ে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে মোবাইলের কলরেট অনেক বেড়ে যাবে, সাধারণ মানুষের আর কথা বলতে পারবে না, তাদের জন্য এক্সপেনসিভ হযে যাবে। হয়ত বা সেই সুযোগটা মোবাইল ফোন অপারেটররা, তারাও নেওয়ার চেষ্টা করবে।”
সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ব্যাখ্যা দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, মোবাইল ফোনের সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক এখনকার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
“মাত্র ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, অর্থাৎ এক টাকায় মাত্র ৫ পয়সা বৃদ্ধি পয়েছে। এই ৫ পয়সা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মোবাইল কল রেট অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়ে যাবে, এজন্য সাধারণ লোকের কথা বলার ব্যয় বেড়ে যাবে- এ রকম আমরা মনে করি না।”
“আমরা দেখেছি সাধারণ লোকের সেই সক্ষমতা আছে, টেলিফোন কলের উপর ৫ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি তারা কনজিউম করতে পারবে।”
মোবাইল ফোনে কলরেট আয়ত্বের মধ্যে রয়েছে দাবি করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “এখানে মোবাইল কল চার্জ এমন পর্যায়ে এসেছে যে মানুষের অকারণে কথা বলার প্রবণতাও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। অকারণ কথা বলতে যেতে রেললাইনের পাশ দিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া, রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে হাঁটতে হাঁটতে অকারণে মোবাইলে কথা বলা- এ ধরনের প্রবণতা বেড়ে গেছে।
“এটি শুধু প্রবণতা রোধ করার জন্য না, আমি বলছি যে কলরেট যে অনেক কম, মানুষ যে অনেক স্বাচ্ছ্যন্দ্যে আছে কথা বলা নিয়ে, সেটি মিন করছি। সেটির সাথে মাত্র ৫ পয়সা যুক্ত হলে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বলে মনে করি।”
মোবাইল ফোন অপারেটররা বলছে, এর ফলে বর্তমানে সেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ১ শতাংশ সারচার্জ, ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং অন্যান্য কর মিলে মোট কর ৩৩.২৫ শতাংশে দাঁড়ালো।
বাজেটে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাবে হতাশা জানিয়ে তা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন এই খাত সংশ্লিষ্টরা।