Published : 25 Oct 2011, 02:28 PM
সচেতন বিশ্ববাসী আরেকটি যুদ্ধের আশংকা করছেন পরাধীন লিবিয়াতে। লিবিয়ান নাগরিক গাদ্দাফির মৃত্যুতে উচ্ছাস প্রকাশ করলেও তারা সত্যিকার অর্থে পরাধীনতার এক অদৃশ্য জালে বন্ধী হয়ে গেল।
নির্ভেজাল খনিজ তেল এবং স্বর্ণকে কুক্ষিগত করে যুক্তরাষ্ট্র তাদের পছন্দ মতো লোক সরকারে বসানোর জন্য তাদের ন্যাটো বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছিল। গাদ্দাফিকে হত্যা করার পর গাদ্দাফির অনুগত পঞ্চাশ জন নাগরিককে ঠান্ডা মাথায় খুন করে তারা।
লিবিয়াবাসীকে এখন থেকে এক পরাধীনতার মধ্যে দিন কাটাতে হবে, কারন গাদ্দাফি সরকার সকল নাগরিকদের যে সকল নাগরিক সুবিধা দিত তা এই সরকার দিতে ব্যর্থ হবে কয়েকটি কারণে। আর তখনই শুরু হবে নাগরিক অসন্তোষ মাথাছড়া দিয়ে উঠবে।
১। যুদ্ধ পরবর্তী দেশ পুনর্গঠনের নামে একটা বিরাট অংকের অর্থ ব্যয় করবে সরকার, সেখানে যুক্ত হবে নব্য সাম্রাজ্যেবাদী কিছু কুকুর (দালাল)
২। যুক্তরাষ্ট্র তাদের যুদ্ধ ব্যয়ের খরচ চাইবে
৩। তেল এবং স্বর্ণের ন্যায্য হিস্যা ছাড়বেনা এনটিসির বন্ধু দেশ যুক্তরাষ্ট্র
৪। এই সব ব্যয় ভার বহন করতে গিয়ে নাগরিক সুবিধা গুলোতে হাত দিবে সরকার।
৫। বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএগ গত ৪২ বছর কোন ঋণ দিয়ে সাহায্য করতে পারেনি গাদ্দাফির শাসনামলে, তাই তারা দেশ পুনর্গঠনে অর্থ স হায়তা দিতে পারে দেশটিকে ঋণের বেড়াজালে আটকানোর জন্য।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি তাঁর শাসনামলে লিবিয়ার নাগরিকদের নিচের যেসব সুবিধা দিয়েছিলেন তা নতুন সরকার নিশ্চত করতে না পারলে এই সরকারকে একটা বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। গাদ্দাফির শাসনামলে লিবিয়ার নাগরিক সুবিধা সমুহ:
১. সবাই বিদ্যুতের সুবিধা পেত কিন্তু তাদের কাউকে বিদ্যুতের বিল দিতে হতো না।
২. লিবিয়ার সব ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত। এসব ব্যাংক থেকে নাগরিকেরা ঋণ নিলে সুদ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ত না।
৩. গাদ্দাফি বিশ্বাস করতেন, প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার রয়েছে একটি বাড়ি পাওয়ার। এ জন্যই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রত্যেক নাগরিকের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত তাঁর নিজের বাবা-মায়ের জন্য কোনো বাড়ি বরাদ্দ করা হবে না। গাদ্দাফির বাবা একটা তাঁবুতে মারা যান। গাদ্দাফি নিজেও তাঁর স্ত্রী ও মাকে নিয়ে তাঁবুতে বসবাস করতেন।
৪. লিবিয়ার প্রত্যেক নবদম্পতিকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার ডলার দেওয়া হতো, যাতে তাঁরা বাড়ি কিনে নতুন জীবন শুরু করতে পারেন।
৫. সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হতো। গাদ্দাফি ক্ষমতা নেওয়ার আগে লিবিয়ায় শিক্ষিতের হার ছিল ২৫ শতাংশ। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩ শতাংশে।
৬. কেউ কৃষি খামার করতে চাইলে সরকার ভূমি, বীজসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ বিনামূল্যে সরবরাহ করত।
৭. কোনো কারণে লিবিয়ার কোনো নাগরিককে শিক্ষা গ্রহণ কিংবা চিকিৎসাসেবা নিতে বিদেশে যেতে হলে সরকার সব ব্যয় বহন করত।
৮. লিবিয়ার তেল বিক্রির একটা নির্ধারিত অংশ প্রত্যেক নাগরিকের ব্যাংক হিসাব নম্বরে সরাসরি জমা হতো।
৯. সন্তান জন্ম দিলে প্রত্যেক নারীকে পাঁচ হাজার ডলার দেওয়া হতো।