ধর্মের অবমাননার অভিযোগ তুলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের মতো হবিগঞ্জের মাধবপুরেও দুটি মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়েছে। রোববার বিকালে মাধবপুর বাজারে এ হামলা হয়। পরে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা জানান, বিকালে মাধবপুর উপজেলা চত্বরে 'আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত' প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। এতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, নাসিরনগর উপজেলার লোকজন অংশ নেন। প্রতিবাদ সভা চলাকালে একদল যুবক মাধবপুরে বাজারে প্রবেশ করে ঝুলন মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর ও কালী মন্দিরের গেইট ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ীরা আতংকে দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহবুব আলী, পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, জেলা ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) এমরান হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলে আকবর মো. শাহজাহান, উপজেলা নিবার্হী কমকর্তা মোকলেছুর রহমান, থানার ওসি মোকতাদির হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম পলাশ, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক তাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন।
মাওলানা ইউনুছ আনছারির সভাপতিত্বে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজিজি, মাওলানা ইলিয়াছ, মাওলানা আশরাফ আলী, মাওলানা মির্জা হাছান আলী, মাওলানা খাদেমুল ইসলাম আল হাসানি, সুন্নি জামাত নেতা জসিম উদ্দিন, এখলাছ সিরাজী, শামিম আহাম্মেদ প্রমুখ।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুনীল দাস বলেন, "মন্দিরে হামলার ঘটনায় আমরা মর্মাহত।" ৫৫ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দুই প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। র্যাব -৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের অধিনায়ক মাঈন উদ্দিন বলেন, র্যাব উপস্থিত হওয়ার আগেই মন্দিরে হামলা করা হয়েছে। কারা মন্দিরে হামলা করেছে প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সপার জয়দেব কুমার ভদ্র বলেন, যারা মন্দিরে হামলা ভাংচুর করে আতংক সৃষ্টি করেছে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।" খবরটি প্রকাশ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
সবেশেষ হলো ক্ষমতাসীন আ'লীগের জাতীয় সম্মেলন। নব গঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষনাও হয়েছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরিফ জেবতিক এর স্ট্যাটাস চোখে ভাসছে "বাংলাদেশের বিলুপ্ত প্রাণী বাঘ নয় হিন্দু জনগুষ্ঠি।" প্রশ্ন হচ্ছে গণতন্ত্রের বুলি মুখে বলে অসাম্প্রদায়িকতার নিরাপত্তা কবে সাধন হবে ? আ'লীগের সময়টাতেই দেশ যখন বিশ্বমানচিত্রে একটি দৃষ্টান্ত তখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কেনো হিন্দু সম্প্রদায়ের জানমালের নিরাপত্তার জন্য প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে ? সকল সময়ের চেয়ে বেশি দুর্গাপুজা উদযাপন হচ্ছে বর্তমানে যেমন সত্য ঠিক তেমনই সকল সময়ের চেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ও হিন্দুজনগুষ্টির মুর্তি ভাঙ্গার তান্ডবও সমান পর্যায়ের সেটা সত্য নয় কি ? যে জাতিগুষ্ঠি বিলুপ্তের প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হলে কোন শ্রেণীর নাগরিক হবে হিন্দু ধর্মালম্বিরা ? সময়ের ব্যবধানে সংখ্যায় কত তে নেমে এসেছে হিন্দুধর্মালম্বিরা ?
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে (অঘোষিত ভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার সংখ্যালঘুদের উচ্চপদহীন রাখা হচ্ছে) এই দেশে কখনো কি কোন হিন্দুধর্মালম্বির লোক প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন? ধর্মনিরপেক্ষতা রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে সিমাবদ্ধ; বাংলাদেশ স্বাধিনতাযুদ্ধে সব চাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে হিন্দুধর্মালম্বিরা, কিন্তু সেই সময়ে শুধু কি হিন্দুরাই ভারতে শরনার্থী হিসেবে গিয়ে ছিলো ? না সকল ধর্মবর্ণের লোক আশ্রয় নিয়ে ছিলো ? কই সেই সব অফেরত শরনার্থীদের সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি হয়নি বরং হিন্দুদের সম্পত্তিই শত্রু সম্পত্তি করা হয়; যা বর্তমানে অর্পিত সম্পত্তি আইন করে স্বাধিনতার প্রায় ৫০বছর পর মানুষ আইনি ভাবে পাচ্ছে। বাংলাদেশের উচ্ছ পর্যায়ের সামরিক বাহিনী থেকে শুরু করে সকল প্রশাসনিক পর্যায়ে হিন্দুধর্মালম্বি নেই কেনো ? হিন্দুধর্মালম্বি সকলই কি সেই সকল পদের অযোগ্য? বাংলাদেশে বিরল দৃষ্টান্ত প্রধান বিচারপতি বর্তমানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের, সে জন্য সাধুবাদ জানাই বর্তমান সরকারকে।
"এখন সময়ের দাবি যা কিছু অবশিষ্ট রয়েছে হিন্দুধর্মালম্বিদের সেটুকুর সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব সরকারকে গ্রহন করার। সময়ের দাবি জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকার পূনস্থাপন প্রায় বিলুপ্ত ধর্মালম্বিদের বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। ফেসবুকের স্ট্যাটাসে কারো ধর্মকে আঘাত করলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা রয়েছে; সেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মৌলবাদ বা জঙ্গিবাদ চক্র থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দেশরত্ম নেত্রী আমাদের গর্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্থক্ষেপে চিরস্থায়ী সমাধান।"