একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির যেসব প্রার্থীর নিশ্চিত জয়ের সম্ভাবনা ছিল, তাদের মনোনয়নপত্রই পরিকল্পিতভাবে বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
Published : 04 Dec 2018, 12:42 PM
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে নিজের মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করতে এসে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন নাটোরের এই সাবেক সংসদ সদস্য।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে জমা হওয়া ৩০৬৫টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাছাইয়ে উৎরাতে পেরেছে ২ হাজার ২৭৯ট; বাতিল হয়েছে ৭৮৬টি।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট অভিযোগ করেছে, বাদ পড়াদের মধ্যে ৮০ জনই ছিলেন তাদের প্রার্থী।
দুলু বলেন, “সরকার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একটা নির্বাচন চেয়েছিল। তারা চেয়েছিল বিএনপি যেন নির্বাচনে না আসে, তাহলে পাঁচ বছরের জন্য তারা ক্ষমতায় থাকবে। বিএনপি এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিরাট একটা অপরাধ করে ফেলেছে। তাই এ কারণে বিএনপির যেসব প্রার্থীরা নিশ্চিত জিতবে তাদের মনোনয়নপত্র পরিকল্পিতভাবে বাতিল করা হয়েছে।”
তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমার নাকি কনভিকশন আছে। কনভিকশন যদি থেকেই থাকে, এটা গত এক বছর আগে আমি সাসপেন্ড করেছি। আমি কনভিকশন সাসপেন্ড করলে এটা নির্বাচন কমিশনের সমস্যা না।”
আওয়ামী লীগের ঢাকা ৭ আসনের মনোনীত প্রার্থী হাজী সেলিম ও বরিশাল ৫ আসনের মনোনীত প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথের মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি বলেন, “হাজী সেলিম ১৩ বছরের জেল নিয়ে যদি নির্বাচন করতে পারে, পঙ্কজ দেবনাথ আমার সাথে আড়াই বছর জেলে ছিল, দুদকের মামলায় আরও দশ বছরের জেল আছে তার। তারা যদি নির্বাচন করতে পারে, তাহলে আমি ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর মনোনয়নপত্র কেন বাতিল হল?
“যেহেতু সরকার আমাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগই দেয় নাই, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আমরা কাগজ জমা দিতে গিয়েছি, আমরা জানতে চেয়েছি কী কারণে আমাদের মনোনয়ন বাতিল করা হলো? তারা বলল, আপিলে যান।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার যত ষড়যন্ত্র করুক না কেন, যে সমস্ত অভিযোগে অভিযুক্ত করে আমাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন অবশ্যই তদন্ত করে দেখে আমাদের মনোনয়নপত্র বহাল করবেন।”
এমনটা ঘটতে পারে, এটা আঁচ করতে পেরেই বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি থেকে দুই থেকে তিনজন করে প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
“আপনারা আশ্চর্য হয়েছেন আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনে ৩০০ প্রার্থী দিয়েছে আর বিএনপি প্রায় ৯০০ প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা আশঙ্কা করেছিলাম বিএনপি প্রার্থীদের বাতিল করা হবে। আমরা দেখতে চাই সরকার কীভাবে ক্ষমতায় যায় গতবারের মতো। জনগণ আমাদের সাথে আছে। আমরা জনগণকে নিয়ে আগামী ৩০ তারিখে সরকারের সব ষড়যন্ত্র বাতিল করব।”
আপিলে মনোনয়ন ফিরে না পেলে উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানান দুলু।