নামে-বেনামে ওয়েবসাইট খুলে ক্ষমতাসীনরা বিএনপির বিরুদ্ধে ‘তথ্য সন্ত্রাস’ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
Published : 01 Dec 2018, 04:33 PM
শনিবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “গণবিচ্ছিন্ন অবৈধ সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রীয় অর্থে বিএনপির বিরুদ্ধে কুৎসিত সাইবার যুদ্ধ শুরু করেছে। অনলাইনে আওয়ামী সমর্থক ও পেইড অ্যাক্টিভিস্টরা কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে এই হাইপার প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে, তথ্য সন্ত্রাস চালাচ্ছে।
“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও নির্জলা মিথ্যাচার, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অশ্লীল রুচিহীন অপপ্রচার চালিয়ে গত ১০ বছরের গুম-খুন-অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন-জেল-জুলুম-সর্বগ্রাসী লুটপাট ও দুঃশাসন থেকে সরকার ভোটারদের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতেই বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে।”
রিজভী বলেন, “আওয়ামী লীগ এই গর্হিত অপকর্ম অর্ধশতাধিক অনলাইন পোর্টাল, ইউটিউব চ্যানেল ও ফেইসবুক গ্রুপে ব্যবহার করছে। এগুলোর মধ্যে আছে, বাংলা ইনসাইডার, বাংলা নিউজ পোস্ট, আমাদের রাজনীতি, চিরায়ত বাংলাদেশ, নিউজ ফর অল, ছবির মতো দেশ, বাংলাদেশী ভাইরাল ভিডিও, চেয়ারম্যান সাব, গেরিলা ৭১, শোন হে বাঙালী, সাইবার ফোর্স ৭১, রক্ত ঋণ একাত্তর, বঙ্গবন্ধু সাইবার ফোর্স, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ব্রিগেড, আম জনতা, ভোরের পাতা, গুজবে কান দিবেন না, মোহাম্মদ এ আরফাত প্রভৃতি।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত আপনজনদের নামেও সাইবার ওয়েবসাইট খুলে অবান্তর, কাল্পনিক, উদ্ভট অপপ্রচার চালাতে হিসেববিহীন অর্থ ব্যয় করছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ প্রোপাগান্ডার কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান হলো আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডি অফিসে স্থাপিত সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন- সিআরআই। যার চেয়ারম্যান এবং হেড অফ স্ট্রাটেজি অ্যান্ড প্রোগ্রামার ট্রাস্টি প্রধানমন্ত্রীর আপনজনররা।”
রিজভী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “এই অপপ্রচার থেকে বিরত থাকুন এবং শালীন ও ইতিবাচক রাজনীতি করুন। সত্য দিয়ে সত্যকে মোকাবেলা করুন।”
গত ১৩ সেপ্টম্বর এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম দলের নেতাকর্মীদের ‘নামে-বেনামে’ ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট খোলার যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা তুলে ধরে রিজভী বলেন, “এইচটি ইমাম সাহেবের ওই বক্তব্যের পরপরই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেশুমার ফেইক আইডি খুলে বিএনপি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ মিথ্যাচার চালাচ্ছে।
“আমরা বলতে চাই, আওয়ামী লীগের এই মিথ্যাচারের জবাব আগামী নির্বাচনে জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে দেবে।”
দলের কারাবন্দি ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর নামে আরো তিনটি মিথ্যা মামলা দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানান রিজভী।
একই সঙ্গে বাগেরহাটের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন অভিযোগ করে অবিলম্বে তাদের প্রত্যাহারের দাবিও জানান তিনি।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ সারাদেশে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের তালিকা তুলে ধরেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জিয়াউর রহমান খান, নাজমুল হক নান্নু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, সাইফুল ইসলাম পটু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।