স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিরা স্বপদে থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। প্রার্থী হতে হলে তাদের ওই পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।
Published : 24 Nov 2018, 11:11 PM
শনিবার নির্বাচন কমিশনের সভায় বিষয়টির আইনি পর্যালোচনায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন।
শিগগির এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হবে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, আদালতের পর্যবেক্ষণে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদকে ‘লাভজনক’ বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ওই পদে বহাল থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। একইসঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিষয়েও একই ধরনের নির্দেশনা থাকবে।
সিটি করপোরেশনের মেয়র পদটি ‘লাভজনক’ বিবেচিত হওয়ায় ইতোমধ্যে তাদের পদত্যাগ করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে হয়।
নির্বাচন কমিশনের সভার পর সিদ্ধান্তগুলো সাংবাদিকদের জানান ইসি কর্মকর্তারা
“এরপরও কোনো বিষয়ে আপিল হলে তা নির্বাচন কমিশনে আসবে। কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে।”
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর অযোগ্যতায় বলা হয়েছে- (গ) প্রজাতন্ত্রের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে তিনি প্রার্থী হতে পরবেন না। উল্লেখ্য যে ‘লাভজনক পদ’ (office of profit) অর্থ প্রজাতন্ত্র কিংবা সরকারি সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ কিংবা সরকারের ৫০% এর অধিক অংশীদারিত্ব সম্পন্ন কোম্পানিতে সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত কোনো পদ বা অবস্থান।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার গত ১৯ নভেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে এ বিষয়ে নির্দেশনা জারির অনুরোধ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার আগে উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের পদত্যাগ’ প্রসঙ্গে তার পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার আগে পদত্যাগ করতে হবে কি না-সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এ বিষয়ে অনেকের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে নির্দেশনা জারির জন্য অনুরোধ করেন মির্জা ফখরুল।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা:
(১) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি যিনি বাংলাদেশের নাগরিক এবং যার বয়স ২৫ (পঁচিশ) বৎসর পূর্ণ হয়েছে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার যোগ্য হবেন।
(২) কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার যোগ্য হবেন না , যদি
(ক) কোন উপযুক্ত আদালত তাকে মানসিকভাবে অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষণা করেন;
(খ) তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হবার পর দায় হতে অব্যাহতি লাভ না করে থাকেন;
(গ) তিনি কোন বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোন বিদেশি রাষ্ট্রের আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন;
(ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকে;
(ঙ) তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত হয়ে থাকেন;
(চ) আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না, এমন পদ ব্যতীত তিনি প্রজাতন্ত্রের কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন;
সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য সাধনকল্পে কোন ব্যক্তি কেবল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপ-মন্ত্রী হবার কারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত বলে গণ্য হবেন না।
(ছ) তিনি কোন আইনের দ্বারা বা অধীন অনুরূপ নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হন।