নির্বাচন ভবন পরিণত হয়েছে আ. লীগ অফিসে: রিজভী

ভোট সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন সব দলকে সমান সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ‘বিশেষ সুবিধা’ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2018, 07:50 AM
Updated : 16 Nov 2018, 08:49 AM

দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “তাদেরকে নানা ধরনের তথ্য দিয়ে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সরকারি দলের লোকজন অবাধে বিচরণ করছে। এই ভবনটি এখন আওয়ামী লীগের অফিসে পরিণত হয়েছে।”

আওয়ামী লীগের নির্বাচন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বাবলা নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘নিয়মিত অফিস করছেন’ বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।

ইসি সচিবসহ কমিশনের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাবলার কয়েকটি আলোকচিত্র সংবাদ সম্মেলনে দেখিয়ে রিজভী বলেন, “কমিশনের কর্মকর্তাদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির এই সদস্য। তার ভয়ে তটস্থ কমিশনের বিভিন্ন স্তরের মেধাবী কর্মকর্তারা।

“গোপনে তথ্য না দিলে সরকারবিরোধী লোক হিসেবে চিহ্নিত করে বদলিসহ নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে থাকেন বাবলা। আমাদের কাছে এরকম অনেক অকাট্য তথ্য প্রমাণ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবের সাথেও তার বিশেষ সখ্যতা রয়েছে। “

গত দেড় বছরে এ রকম ‘অসংখ্য ঘটনা’ কমিশনের নজরে আনা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন রিজভী।

নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহমেদ খানের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততারও অভিযোগ আনেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী ও ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক  আরিফা সুলতানা রুমাসহ গ্রেপ্তার ৬৮ নেতা-কর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।

অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মুনির হোসেন ও শাহীন শওকত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

হাস্যকর অভিযোগ: আ. লীগ

বিএনপি নেতা রিজভীর অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের নির্বাচন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বাবলা বলেছেন, তিনি নির্বাচন ভবনে যান দলের কাজে, আর সেই কাজ তিনি নিয়ম মেনেই করেন।  

অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাবলা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিবন্ধিত দল হিসেবে আমাদের অনেক চিঠি আদান প্রদানের বিষয় থাকে। আর আপনারা সাংবাদিকরাও সেখানে যান, আপনাদের মত আমিও তথ্য নিই। কেউ বলতে পারবে না, কোন তথ্য দেওয়ার জন্য কাউকে কিছু বলেছি।”

তিনি বলেন, “পার্টির জন্য আচরণ বিধির কপি আনা তো অপরাধ না। বিএনপি আমার বিরুদ্ধে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছে।”

নির্বাচন ভবনকে ‘আওয়ামী লীগের অফিসে’ পরিণত করার অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দলের উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, এর মর্যাদা দিতে আওয়ামী লীগ জানে।”

রিজভীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। একজন জাতীয় নেতার মুখে এমন অসত্য বক্তব্য লজ্জাজনক, অত্যন্ত হাস্যকর।”  

বিএনপির  অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচনে কমিশনের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।