শিমরাইলে কারখানায় সন্দেহজনক গাড়ি

কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে হত্যার ঘটনায় তদন্তে রোববার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলের একটি কারখানা থেকে একটি প্রাইভেটকার জব্দ করেছে পুলিশ।

আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের এক স্বজনের কারখানা থেকে জব্দ ওই গাড়িটি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নূর হোসেনের ভাইয়ের বলে কারখানার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনের বাড়ি শিমরাইলে। শনিবার তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি মাইক্রোবাস জব্দ এবং ১২ জনকে আটক করে পুলিশ। 

নজরুল অপহরণ ও হত্যামামলায় প্রধান আসামি নূর হোসেন বর্তমানে পলাতক। নজরুলের লাশ পাওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার শিমরাইলে তার কার্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছিল ক্ষুব্ধ জনতা। 

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদ উদ্দিন দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, শিমরাইলে জিএম গ্লাস ফ্যাক্টরি থেকে চকলেট রংয়ের একটি টয়োটা প্রিমিও গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।

নজরুলকে অপরহরণে গাড়িটি ব্যবহার করা হয়েছিল কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। গাড়িটির মালিক কে, তা কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যাবে।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. জাকারিয়া বলেন, প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে গাড়িটি সনাক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রাইভেটকারটি নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনে নেয়া হয়েছে।

জিএম গ্লাস ফ্যাক্টরির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আব্দুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, “গাড়িটি নূর হোসেনের ভাই জজ মিয়ার। তিনি প্রায়ই গাড়িটি কারখানায় রেখে যেতেন।”

ঢাকা মেট্রো গ-২৯৮৮৬২ নম্বরের ওই গাড়িটি নূর হোসেনকে ব্যবহার করতে দেখেছেন বলে স্থানীয় অনেকেই জানিয়েছেন।

এই গাড়িটি শনিবার আটক করা হয়েছিল নূর হোসেনের বাড়ি থেকে।

জিএম গ্লাস ফ্যাক্টরির জিএম আউয়াল জানান, শামীম ওসমানের মামাশ্বশুর শামসুদ্দিন ও জালালউদ্দিন এই কারখানার মালিক।

ঢাকা মেট্রো গ-২৯৮৮৬২ নম্বরের ওই গাড়িটি নূর হোসেন প্রায়ই ব্যবহার করতেন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

নূর হোসেনের মতো নজরুলও আওয়ামী লীগ সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার নজরুল ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন।

সিটি কর্পোরেশন হওয়ার আগে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে দুজনের রেশারেশি ছিল বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বেরোনোর পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে নজরুল, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজন অপহৃত হন।

অপহরণের তিন দিন পর গত বুধবার নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে অপহৃত ছয়জনের এবং পরদিন আরেকজনের লাশ পাওয়া যায়। 

এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জেলা আইনজীবী সমিতির ডাকে নারায়ণগঞ্জে রোববার হরতাল চলছে। এই হরতালের মধ্যে কারখানাটিতে থেকে গাড়ি জব্দ হল।

নূর হোসেনের বাড়িতে অভিযানে গাড়ি জব্দ, আটক ১২

তখন অভিযান হলে জীবিত পেতাম: নজরুলের স্ত্রী

ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে নারায়ণগঞ্জ

খুন করে ইট বেঁধে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিল তাদের