কম দামে রাশিয়ার তেল কিনছে পাকিস্তান

ভারত ও চীনের পর এবার কম দামে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ ও মস্কোর মধ্যে হওয়া চুক্তির অধীনে মূল্যছাড়ে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের প্রথম অর্ডার দিয়েছে পাকিস্তান। যার আওতায় চালানবাহী জাহাজ আগামী মে মাসেই করাচি বন্দরে ভিড়বে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী।

ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দেশটি তেলের বাজার পশ্চিমা বিশ্ব থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরে ভারত ও চীন রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা দেশ হয়েছে। এবার রাশিয়ার তেলের ক্রেতার এই তালিকায় যুক্ত হল পাকিস্তান।

চরম জ্বালানি সঙ্কটের মুখে পাকিস্তান সস্তায় রাশিয়া থেকে তেল কিনছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তান পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘদিনের মিত্র এবং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা ভারতের ঘোর শত্রুদেশ হওয়ার কারণে তাদের জন্য অপরিশোধিত রুশ তেল গ্রহণ করা কঠিন। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তাদের কম দামে এই তেল পাওয়া জরুরি।

বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে ঠেকেছে, যা দেশটির কয়েক সপ্তাহের আমদানির জন্যও যথেষ্ট নয়। তাছাড়া, পাকিস্তানের মুদ্রার মানও ডলারের বিপরীতে অনেক কমে যাওয়ায় অনেকটা সীমিত পরিসরেই আমদানি করতে হচ্ছে দেশটিকে। এমন পরিস্থিতিতেই সরকারের এ সিদ্ধান্ত।

পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী মুসাদিক মালিক বুধবার বলেছেন, “চুক্তির আওতায়, পাকিস্তান পরিশোধিত তেল নয়, কেবল অপরিশোধিত তেল কিনবে। প্রথম চালান ঠিকভাবে এগোলে রাশিয়া থেকে দৈনিক ১ লাখ ব্যারেল তেল আমদানি করার আশা আছে।”

ওদিকে, চুক্তির আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মস্কোর এক সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোয় এ চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে জানতে রুশ সরকারের সঙ্গে বার্তা সংস্থা রয়টার্স যোগাযোগ করলে তারা কোনও সাড়া দেয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তানে উরাল গ্রেডের তেল সরবরাহ করার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।

পাকিস্তান তাদের অপরিশোধিত তেলের বেশিরভাগই সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আমদানি করে। এখন তারা রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করলে এ দুই দেশ থেকে পাকিস্তানের আমদানি অনেকটাই কমে যাবে।

কত দামে বা কোন মুদ্রায় এ তেল কেনা হবে, এমন প্রশ্নে পাকিস্তানের পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, “এখনই এ চুক্তির বাণিজ্যিক দিক সম্পর্কে আমি কিছু বলব না।”