রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে নিষিদ্ধ ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার দেখালেন কিম

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগুর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। বৈঠকে উভয়ই সম্পর্ক আরও জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শনীতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগু (বামে) এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম (ডানে)। ছবি: রয়টার্স।

উত্তর কোরিয়া সফরে থাকা রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুকে একটি প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে নিয়ে গিয়ে নিষিদ্ধ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ভাণ্ডার দেখিয়েছেন নেতা কিম জং উন।

প্রদর্শনীর অস্ত্রের মধ্যে ছিল হোয়াসং আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)। এপ্রিলে এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছিল উত্তর কেরিয়া।

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার আওতায় নিষিদ্ধ। এই প্রস্তাবনা গৃহীত হয়েছিল রাশিয়া এবং চীনের সমর্থন নিয়েই।

কিন্তু এ সপ্তাহের সফরে চীন এবং রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাদের ঐক্যবদ্ধ সংহতিই প্রকাশ করেছে। তাছাড়া, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সের্গেই শোইগুই হচ্ছেন রাশিয়ার প্রথম প্রতিরক্ষামন্ত্রী যিনি উত্তর কোরিয়ায় সফর করছেন।

শোইগুর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। বৈঠকে উভয়ই সম্পর্ক আরও জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেন। সেইসঙ্গে কিমকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি চিঠিও শোইগু দিয়েছেন বলে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ। শোইগুর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল পাঠানোর জন্য পুতিনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিম।

কোভিড মহামারীতে কড়া ব্যবস্থা নিয়ে উত্তর কোরিয়া সীমান্ত বন্ধ করার পর থেকে দেশটিতে প্রথম বিদেশি প্রতিনিধিদল হিসাবে সফর করছে শোইগুর নেতৃত্বাধীন রুশ দল এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য লি হংঝংয়ের নেতৃত্বাধীন চীনা দল।

পিয়ংইয়ংয়ে কোরীয় যুদ্ধ অবসানের ৭০ বছরপূর্তি উৎসব উদযাপনে অংশ নিতেই উত্তর কোরিয়ায় গেছেন চীন ও রাশিয়ার এই প্রতিনিধিরা। উত্তর কোরিয়ায় ওই যুদ্ধ অবসানের দিনটিকে ‘বিজয় দিবস’ হিসাবে পালন করা হয়।

সাধারণত বড় ধরনের সামরিক কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে এই বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হয়ে থাকে। বৃহস্পতিবার কুচকাওয়াজের পরই প্রতিনিধিদলের সফর শেষ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রতিনিধিদের এই সফরকালে কেসিএনএ তাদের খবরে ইউক্রেইন যুদ্ধের কোনও কথা উল্লেখ করেনি। তবে উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাং সান নাম বলেছেন, রাশিয়ার ‘ন্যায়বিচারের জন্য যুদ্ধ’ এবং এর (রাশিয়ার) সার্বভৌমত্ব রক্ষার চেষ্টা পুরোপুরি সমর্থন করে উত্তর কোরিয়া।

কেসিএনএ জানায়, নতুন অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের প্রদর্শনীতে শোইগুকে সাথে নিয়ে ঘুরেছেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন নেতা কিম। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু ছবিতেও কিম ও তার অতিথিদেরকে উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শনীতে দেখা গেছে।

আরেকটি ছবিতে দেখা যাওয়া অস্ত্রকে নতুন একটি ড্রোন বলে মনে হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। একজন বিশ্লেষক বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরিদর্শনে শোইগুর উপস্থিতি এ ইঙ্গিতই দিচ্ছে যে, দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচিকে স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া।