গতবছর ডিসেম্বরে ইসরায়েলের গোলায় গাজার সবচেয়ে বড় ফার্টিলিটি ক্লিনিকে এই বিপুলসংখ্যক প্রাণ ঝরে যায়, যে বর্বরতা অনেকেরই দৃষ্টিগোচর হয়নি।
Published : 17 Apr 2024, 10:02 PM
গাজায় ইসরায়েলের হামলা থেকে মানুষ, বাড়িঘর, অবকাঠামো, হাসপাতাল কোনও কিছুই রক্ষা পায়নি। এর মধ্যেই গাজার একটি ফার্টিলিটি ক্লিনিকে ইসরায়েলি গোলার আঘাতে ৪ হাজারের বেশি ভ্রূণসহ শুক্রাণুর নমুনা ও ডিম্বাণু ধ্বংস হয়েছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার আল বাসমা আইভিএফ কেন্দ্রে ঘটে এ ঘটনা। গত বছর ডিসেম্বরে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলা আঘাত হেনেছিল গাজার সবচেয়ে বড় এই ফার্টিলিটি ক্লিনিকে।
বিস্ফোরণে সেখানকার ভ্রূণবিদ্যা ইউনিটের এক কোণে সংরক্ষিত পাঁচটি তরল নাইট্রোজেন ট্যাঙ্কের ঢাকনা ফেটে যায়। এতে অতি-ঠান্ডা তরল বাষ্পীভূত হয় এবং ট্যাঙ্কের ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে সেটিতে সংরক্ষিত থাকা ৪ হাজারের বেশি ভ্রূণ এবং আরও ১ হাজার শুক্রাণুর নমুনা ও অনিষিক্ত ডিম্বানু ‘ধ্বংস’ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের এই একটি হামলারই প্রভাব হয়েছে সুদূরপ্রসারী। এ হামলা গাজার ২৩ লাখ মানুষের ওপর ইসরাইলের সাড়ে ছয় মাস ধরে চলা হত্যাযজ্ঞে অদেখা এক বর্বরতার উদাহরণ, যা অনেকেরই দৃষ্টিগোচর হয়নি।
ইসরায়েলের এ হামলার মধ্য দিয়ে মূলত এক গোলাতেই নিভে গেছে ৫ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণ, যারা জীবন পাওয়ার আগেই ঝরে গেছে। চুরমার হয়েছে হাজারো নিঃসন্তান দম্পতির স্বপ্ন।
১৯৯৭ সালে গাজার আইভিএফ ক্লিনিকটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কেমব্রিজ-প্রশিক্ষিত প্রসূতি এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বাহেলদিন ঘালাইনি।
তিনি বলেন, “আমরা জানি যে, এই ৫ হাজার জীবন বা সম্ভাব্য জীবন, বাবা-মায়ের ভবিষ্যৎ বা অতীতের জন্য কতটা গুরুত্ব রাখে। অন্তত অর্ধেক দম্পতি- কার্যকর ভ্রূণ তৈরির জন্য যারা শুক্রাণু বা ডিম্বাণু উৎপাদন করতে পারছেন না– তাদের আর সন্তান নেওয়ার সুযোগ থাকবে না।’”
ঘালাইনি জানান, গাজায় দারিদ্র্য থাকার পরও নিঃসন্তান দম্পতিরা আইভএফ পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করে। কেউ কেউ টিভি কিংবা অলঙ্কার বিক্রি করে এর খরচ মেটায়।