রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করবে মিয়ানমার

রাজনৈতিক অশান্তি ও দেশজুড়ে অস্থিরতার পাশপাশি জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য ও বিদ্যুৎ স্বল্পতার জন্য কঠিন চাপে পড়েছে মিয়ানমার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 August 2022, 08:30 AM
Updated : 18 August 2022, 08:30 AM

রাশিয়া থেকে গ্যাসোলিন ও জ্বালানি তেল আমদানি করার পরিকল্পনা করেছে সামরিক বাহিনী শাসিত মিয়ানমার।

জান্তার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ এবং বাড়তে থাকা মূল্য কমাতে এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের মধ্যে আরেকটি উন্নয়নশীল দেশ রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির সিদ্ধান্ত নিল।

মিয়ানমার রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে। উভয় দেশের বিরুদ্ধেই একগাদা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে পশ্চিমা দেশগুলো। গত বছর নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করায় মিয়নামারের বিরুদ্ধে এবং চলতি বছর ইউক্রেইনে আক্রমণ চালানোয় রাশিয়া বিরুদ্ধে এসব নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা।

রাশিয়ার রপ্তানি করা তেলের বৃহত্তম গন্তব্য ইউরোপ। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন চলতি বছরের মধ্যে রাশিয়ার তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে। ফলে নিজেদের জ্বালানি রপ্তানির জন্য নতুন ক্রেতা খুঁজছে মস্কো।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমারের সামরিক মুখপাত্র জাও মিন তুন বলেন, “রাশিয়া থেকে পেট্রল আমদানির অনুমতি পেয়েছি আমরা।”

তিনি জানান, রাশিয়ার জ্বালানির ‘মান ও সাশ্রয়ী মূল্যের’ কারণে তারা এটিকে বেছে নিয়েছেন।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর থেকে মিয়ানমারে রাশিয়ার জ্বালানি তেল পৌঁছানো শুরু করবে।

জাও মিন তুন জানান, মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের গত মাসের রাশিয়া সফরের সময় তেল ও গ্যাস আমদানি নিয়ে আলোচনা হয়।

তিনি আরও জানান, রাশিয়া ও চীনকে নিয়ে মিয়ানমারে যৌথভাবে তেল অনুসন্ধান করার কথা বিবেচনা করবে সরকার।

বুধবার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক বিবৃতি বলা হয়েছে, মিয়ানমারের চাহিদা অনুযায়ী সাশ্রয়ী মূল্যে রাশিয়ার তেল ক্রয়, আমদানি ও পরিবহনের জন্য মিন অং হ্লাইংয়ের এক ঘনিষ্ঠ মিত্রকে প্রধান করে ‘রুশিয়ান অয়েল পারচেজিং কমিটি’ গঠন করেছে সামরিক বাহিনী।

রাজনৈতিক অশান্তি ও দেশজুড়ে অস্থিরতার পাশপাশি জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য ও বিদ্যুৎ স্বল্পতার জন্য কঠিন চাপে পড়েছে মিয়ানমার। এসব কারণেই দেশটির সামরিক নেতৃবৃন্দ জ্বালানি তেল আমদানির দিকে ঝুঁকেছে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে পেট্রলের মূল্য সাড়ে তিনশ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে লিটার প্রতি ২৩০০ থেকে ২৭০০ কিয়াতে (প্রায় ১ ডলার) দাঁড়িয়েছে।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জ্বালানি ঘাটতির কারণে গত সপ্তাহে দেশটির অনেক এলাকায় পেট্রল পাম্প বন্ধ হয়ে গেছে।

রাশিয়া মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অন্যতম বড় অস্ত্র সরবরাহকারী।