রাশিয়ার প্রভাবাধীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে পাওয়া ইউক্রেইনের স্বাধীনতার ৩১ বছর পূর্তির দিনে দেশটিতে রুশ আক্রমণের ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে।
২৪ অগাস্ট, বুধবার ইউক্রেইনের স্বাধীনতা দিবস। এর ঠিক ছয় মাস আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে ক্রেমলিন কথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এদিন রুশ বাহিনী আকাশ, ভূমি ও জলপথে আক্রমণ চালাতে পারে এমন আশঙ্কায় স্বাধীনতার দিবসের উদযাপন সীমিত করেছে ইউক্রেইন।
রাজধানী কিইভে জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে থাকা শহর খারকিভে কর্তৃপক্ষ কারফিউ জারি করেছে। যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ও অকেজো হয়ে পড়া রুশ ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান কিইভের রাস্তায় রেখে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ইউক্রেইন সরকার।
মঙ্গলবার রাতে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্ভাব্য ‘রাশিয়ান উস্কানির’ বিষয়ে সতর্ক করেছেন এবং কর্তৃপক্ষ বিমান হামলার সতর্কতা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
জেলনস্কি বলেছেন, “আমরা আমাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ হুমকির বিরুদ্ধে লড়ছি আর এটি এমন এক সময়ে যখন আমরা জাতীয় ঐক্যের সর্বোচ্চ স্তর অর্জন করেছি।”
ইউক্রেইনের যুদ্ধে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার বেসামরিক নিহত হয়েছে, যুদ্ধ দেশটির ৪ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশিকে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেছে, বহু শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এ যুদ্ধের কারণে বিশ্ব বাজার প্রবল ঝাঁকুনি খেয়েছে।
রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেইনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নিয়েছিল, এখন তারা সংলগ্ন কৃষ্ণসাগর ও আজভ সাগরের উপকূলবর্তী ইউক্রেইনীয় অঞ্চলে তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকার সীমা অনেকটা বাড়িয়ে নিয়েছে এবং পূর্ব দিকে দনবাস অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা কব্জা করেছে।
ইউক্রেইনের সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, এ পর্যন্ত যুদ্ধে তাদের প্রায় ৯ হাজার সেনা নিহত হয়েছে।
রাশিয়া তাদের ক্ষয়ক্ষতির কথা প্রকাশ করেনি; কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দাদের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধে ১৫ হাজারের মতো রুশ সেনা নিহত হয়েছে।
রাশিয়া দাবি, তারা প্রতিবেশী দেশটিকে ‘নব্যনাৎসি’ মুক্ত করতে সেখানে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে। আর এই আক্রমণকে বিনা উস্কানিতে চালানো ‘সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন’ বলে অভিহিত করেছে ইউক্রেইন।
১৯৯১ সালের ২৪ অগাস্ট সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে বের হয়ে আসে ইউক্রেইন আর এক গণভোটে ইউক্রেইনীয়রা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেয়।