ইরানে গত বছর নভেম্বর মাস থেকে অন্তত ৬৫০ জন ছাত্রীকে স্কুলের ভেতর বিষাক্তগ্যাস প্রয়োগ করা হয়েছে।
অনেকের ধারণা, মেয়েদের স্কুল যাওয়া আটকাতে এবং বালিকা বিদ্যালয়গুলো বন্ধ করতে বাধ্য করার জন্য ইচ্ছা করে কেউ এই কাজ করেছে।
যদিও এই ঘটনায় কোনো ছাত্রীর মৃত্যু হয়নি। তবে কয়েকশ ছাত্রীকে শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা এবং ক্লান্তিতে ভুগতে হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালেও যেতে হয়েছে বলে জানায় বিবিসি।
গত রোববার ইরানের উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউনেস পানাহি ভয়ঙ্কর এক তথ্য সামনে নিয়ে আসেন। ওইদিন তিনি বলেছিলেন, ‘‘দেখেশুনে মনে হচ্ছে, কিছু লোক চায় সমস্ত স্কুল, বিশেষ করে মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হোক।”
যদিও পরে তিনি বলেন, তার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ইরানের প্রসিকিউটর জেনারেল গত সপ্তাহে ঘোষণা দেন, তিনি এ বিষয়ে ফৌজদারি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত যা তথ্য পাওয়া গেছে তাতে খুব সম্ভবত এটা অপরাধকাণ্ড এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে এটা করা হয়েছে।”
বিবিসি জানায়, প্রথম বিষপ্রয়োগের ঘটনা ঘটে গত ৩০ নভেম্বর। ওইদিন কওম নগরীর দ্য নূর টেকনিক্যাল স্কুলের ১৮ শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিতে হয়।
তারপর থেকে আরো ১০টির বেশি বালিকা বিদ্যালয়ে একই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে পশ্চিমের লোরেস্তান প্রদেশের বরুজার্ড নগরীতে চারটি স্কুলের অন্তত ১৯৪ ছাত্রীকে বিষাক্তগ্যাস প্রয়োগ করা হয়।
অসুস্থ হয়ে পড়া মেয়েরা পরে জানায়, অসুস্থ হয়ে পড়ার আগে তারা ছোট কমলালেবু বা পঁচা মাছের গন্ধের মত গন্ধ পাচ্ছিল।
বিষপ্রয়োগে অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বাবা-মায়েরা গত ১৪ ফেব্রুয়ারিতে নগরীর প্রশাসনিক ভবনের বাইরে জড়ো হয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দাবি করে।
পরের দিন সরকারের মুখপাত্র আলি বাহাদোরি জাহরোমি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই বিষপ্রয়োগের ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
এরপরই গতসপ্তাহে প্রসিকিউটর জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মোনতাজেরি ঘটনাটির বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।