রুশ আগ্রাসনের জাতিসংঘ নিন্দা প্রস্তাবে ভোট দেয়নি ভারত

ইউক্রেইনে একবছর আগে রাশিয়ার শুরু করা আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আনা নিন্দা প্রস্তাবনায় আবারও ভোটদানে বিরত থেকেছে ভারত। 

বিবিসি জানায়, প্রস্তাবনাটির পক্ষে পড়েছে ১৪১ ভোট এবং বিপক্ষে পড়েছে ৭ ভোট। রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, মালি, ইরিত্রিয়া ও নিকারাগুয়া বিপক্ষে ভোট দেয়। আর ভারত, চীন, ইরান, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ৩২ টি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে।

ভারত আগ্রাসনের বিষয়ে তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, শান্তিপূর্ণ সংলাপই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার একমাত্র পথ।

ঠিক একবছর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইন আগ্রাসন শুরু করেছিল রাশিয়া। তারপর থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একইরকম প্রস্তাবনা নিয়ে একাধিক ভোট হয়েছে। একবার ছাড়া প্রতিটি ভোটেই বিরত থেকেছে ভারত।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়ার জন্য ভারত বরাবরই চাপের মুখে পড়েছে। এবার যাতে ভারত ভোট দেয়, সেজন্য বিভিন্ন মহলে কূটনৈতিক আলোচনা হয়েছে। মার্কিন কূটনীতিক এবং রাজনীতিবিদরাসহ ইইউ প্রধানও ভারত সফর করেছেন। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীও ভারত সফর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেইন প্রকাশ্যেই ভারতকে পরিষ্কার অবস্থান নিয়ে সঠিক কাজটি করার আহ্বান জানিয়েছে।

কিন্তু শেষপর্যন্ত ভারত প্রকাশ্যে রাশিয়ার সমালোচনা না করার আগের অবস্থানেই অনড় থাকল। শুক্রবারের ভোটে জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কম্বোজ বলেন, “মানুষের জীবনের বিনিময়ে কোনও সমস্যার সমাধান আসতে পারে না।”

নিউ ইয়র্কে দুইদিন ব্যাপী জাতিসংঘের বিশেষ বৈঠক চলার পর ভোটাভুটি হয়েছে সাধারণ সভায়। বহু আলোচনার পর জার্মানি প্রস্তাবনা পেশ করে। সেখানে বলা হয়, জাতিসংঘের চার্টার মেনে ইউক্রেইনে অবিলম্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। ইউক্রেইনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখন্ডতাকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি রাশিয়ার অধিকৃত অঞ্চলের দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয় প্রস্তাবনা।

তাছাড়া, ইউক্রেইন থেকে অবিলম্বে নিঃশর্তে রুশ সেনা প্রত্যাহার এবং বৈরিতা বন্ধেরও দাবি জানানো হয়েছে জাতিসংঘ প্রস্তাবনায়।

ভারত তাদের বক্তব্যে কোনও যুদ্ধই কাম্য নয় বললেও এ যুদ্ধে তারা কোনও পক্ষ অবলম্বন করতে ইচ্ছুক নয়।

রাশিয়া এবং ভারত সেই স্নায়ুযুদ্ধকালের সময় থেকে একে অপরের প্রতি আস্থাশীল সম্পর্ক বজায় রেখেছে। রাশিয়া থেকে ভারত সবচেয়ে বেশি অস্ত্রের চালান পায়। দুইদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সহযোগিতারও ইতিহাস আছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর নিয়ে প্রস্তাবনায় ভেটো দিয়েছে রাশিয়া।