অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া ভারত ও অস্ট্রেলিয়া নিজেদের মধ্যে নতুন একটি অভিবাসন চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে।
বুধবার সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের পর এই চুক্তির ঘোষণা আসে।
শিক্ষার্থী, স্নাতক পাস, শিক্ষক, গবেষক ও ব্যবসায়ীদের দ্বিমুখী যাতায়াতে গতিশীলতা বাড়ানোই নতুন এই চুক্তির লক্ষ্য, বলেছে দেশ দুটি।
অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রসঙ্গও দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে আলোচিত হয়েছে, জানিয়েছে বিবিসি।
ভারত ও অস্ট্রেলিয়া উভয় দেশই চার সদস্যের কোয়াড জোটে আছে। এই নিরাপত্তা জোটের অন্য দুই সদস্য হচ্ছে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র।
সিডনিতে কয়েকদিন আগে এই জোটের একটি শীর্ষ বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও ঋণসীমা নিয়ে আলোচনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে তড়িঘড়ি ওয়াশিংটন ডিসিতে ফিরতে হওয়ায় বৈঠকটি বাতিল হয়ে যায়।
এরপরও মোদী জাপানে জি৭ বৈঠক শেষে অস্ট্রেলিয়া যান। ২০১৪-র পর দেশটিতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এটিই প্রথম সফর।
দুই মাস আগে, মার্চে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজও ভারত সফরে গিয়েছিলেন।
অস্ট্রেলিয়ায় এখনই বিপুল সংখ্যক ভারতীয় অভিবাসী রয়েছে। জনশুমারির তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যে ১০ লাখের বেশি মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী হয়েছে, তার প্রায় এক চতুর্থাংশই গেছে ভারত থেকে।
মঙ্গলবার মোদী জানান, দুই দেশের মধ্যে খননকাজ ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ নিয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির আলোচনা চলছে; এর পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া-ভারত গ্রিন হাইড্রোজেন টাস্কফোর্স প্রতিষ্ঠায় অগ্রগতিও হয়েছে।
ভারত ও অস্ট্রেলিয়া বিস্তৃত অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি নিয়েও কাজ করছে; যে চুক্তির আলোচনা এক দশকেরও বেশি সময় আগে শুরু হয়েছিল।
মঙ্গলবার কয়েক হাজার প্রবাসী ভারতীয় সিডনির অন্যতম বৃহৎ একটি ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে হাজির হয়েছিলেন, সেখানে মোদী ভাষণ দেন।
“শেষবার আমি এই মঞ্চে দেখেছিলাম ব্রুস স্প্রিংস্টিনকে (মার্কিন গায়ক, গীতিকার), তিনিও এতটা অভ্যর্থনা পাননি, যতটা মোদী পেয়েছেন,” অনুষ্ঠানে এমনটাই বলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ।
মোদী সেখানে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত ভারতীয়দেরকে দুই দেশের মধ্যকার ‘জীবন্ত সেতু’ অভিহিত করেন।
“পারস্পরিক আস্থা ও সম্মানই ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্কের ভিত্তি,” বলেন তিনি।