উত্তর কোরিয়া বলেছে, তাদের পরীক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর কোনোটিকে গুলি করে নামানোর যেকোনো প্রচেষ্টাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ বলে বিবেচনা করবে তারা।
মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, পিয়ংইয়ং কোরীয় উপদ্বীপে বাড়তে থাকা উত্তেজনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়াকে দায়ী করেছে।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি উত্তরের কৌশলগত অস্ত্র পরীক্ষার বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয় তাহলে পিয়ংইয়ং সেটিকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে দেখবে।
উত্তর কোরিয়া প্রশান্ত মহাসাগরে আরও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা কখনোই উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে নামায়নি। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা জারি আছে।
কিন্তু জাপানের ওপর দিয়ে তারা আরও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে, উত্তর কোরিয়া এমন ইঙ্গিত দেওয়ার পর থেকেই এ নিয়ে নতুন নিরীক্ষা শুরু হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
উত্তর কোরিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরকে ‘ফায়ারিং রেঞ্জ’ এ পরিণত করার হুমকি দেওয়ার পর এবার কিম ইয়ো বলেছেন, “প্রশান্ত মহাসাগর যুক্তরাষ্ট্র বা জাপানের দখলি সম্পত্তি নয়।”
বিশ্লেষকরা বলেছেন, উত্তর কোরিয়া যদি তাদের দেওয়া হুমকি অনুযায়ী প্রশান্ত মহাসাগরকে ‘ফায়ারিং রেঞ্জ’ এ পরিণত করে, তাহলে এটি পারমাণবিক শক্তিধর নিঃসঙ্গ দেশটিকে তার সামরিক সংকল্পের সংকেত দেওয়ার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পথও করে দেবে।
পৃথক এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিদেশি সংবাদ বিভাগের প্রধান যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, ওয়াশিংটন সোমবার বি-৫২ বোমারু বিমান নিয়ে যৌথ মহড়া পরিচালনার মাধ্যমে এবং যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া সামরিক মহড়ার পরিকল্পনা করে পরিস্থিতিকে ‘উত্তপ্ত’ করে তুলছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধবিমানগুলোর সঙ্গে একটি যৌথ মহড়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বি-৫২ বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে; এটি উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকির বিরুদ্ধে ‘শক্তির মহড়া’ বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এই দুই দেশ আগামী সপ্তাহ থেকে ‘ফ্রিডম শিল্ড’ নামের ১০ দিনেরও বেশি সময়ব্যাপী বড় ধরনের সামরিক মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে।
১৯৫০-১৯৫৩ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত কোরীয় যুদ্ধের জের ধরে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ২৮৫০০ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। কোনো শান্তিচুক্তি ছাড়াই অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে কোরীয় যুদ্ধ থামায় কার্যত দেশগুলো এখনও যুদ্ধরতই আছে।
আরও পড়ুন: