গত বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে নাইজারে ‘যত দ্রুত সম্ভব’ সামরিক হস্তক্ষেপের পদক্ষেপের পক্ষে মত দিয়েছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো।
Published : 13 Aug 2023, 12:11 PM
নাইজারে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা সেনা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার জন্য সেখানে একটি পার্লামেন্টারি কমিটিকে পাঠানোর কথা জানিয়েছে ইকোনোমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস)।
ইকোওয়াসের একজন মুখপাত্র শনিবার এ তথ্য জানিয়ে বলেন, নাইজারে বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধারে আঞ্চলিক উদ্যোগের ‘শেষ চেষ্টার’ অংশ হিসেবে ওই প্রতিনিধি দল সেখানে পাঠানো হবে। প্রতিনিধি দলে ধর্মীয় নেতারাও রয়েছেন।
গত ২৬ জুলাই নাইজারের সামরিক বাহিনী দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে বন্দি করে এবং দেশটির নির্বাচিত সরকারকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে ক্ষমতার দখল নেয়। আঞ্চলিক শক্তি এ অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বন্দি প্রেসিডেন্টকে মুক্তি দিয়ে তার হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার আল্টিমেটাম দেয়। নতুবা এমনকি সামরিক হস্তক্ষেপ করা হতে পারে বলেও হুমকি দেয়।
নাইজারের সামরিক নেতৃত্ব ওই আল্টিমেটাম উপেক্ষা করলে গত বৃহস্পতিবার সংকট সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক করেন ইকোওয়াসের নেতারা। ওই বৈঠকে আঞ্চলিক নেতারা অভিযানের জন্য প্রস্তুত বাহিনী (স্ট্যান্ডবাই ফোর্স) মোতায়েন করতে একমত হয়েছেন।
তবে এই বাহিনীর কতটা বড়, সেনা সমাবেশ করতে কত সময় লাগবে এবং এই বাহিনী সত্যিই অভিযান চালাবে কিনা সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছুই জানাননি তারা। নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবু বলেছেন, সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসাবে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করা হবে।
নাইজারে অভিযান চালাতে সেনা মোতায়েনের পথে পশ্চিম আফ্রিকা
চাল ভাজা, পাস্তা খেয়েও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশায় নাইজারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট
নাইজারের সংকট নিয়ে আরো আলোচনার জন্য শনিবার ইকোওয়াস পার্লামেন্ট বসে। তবে সেখানেও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
এদিন, পার্লামেন্ট থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে কমিটি নাইজারে যাওয়ার জন্য ইকোওয়াসের বর্তমান সভাপতি নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবুর অনুমতি নিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বলেও জানান ওই মুখপাত্র।
শেখ আব্দুল্লাহি বালা লাও এর নেতৃত্বে নাইজেরিয়ার একদল ইসলামিক আলেমও প্রেসিডেন্ট তিনুবুর সঙ্গে দেখা করে নাইজারে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছেন। এবং প্রেসিডেন্ট তাদের অনুমতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনুবুর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা।
দলটি এরইমধ্যে নাইজারে পৌঁছে গেছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দলটি নাইজারের ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করে বর্তমান কূটনৈতিক অচলাবস্থার অবসান করার চেষ্টা করার পরিকল্পনা করেছে।
নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর পশ্চিমা দেশগুলোর মূল মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে ওই অঞ্চলে রাশিয়ার প্রভাব আরো বৃদ্ধির আশঙ্কা। যেমনটা হয়েছে প্রতিবেশী মালি ও বুরকিনা ফাসোতে। ওই দুই দেশেও সামরিক অভ্যুত্থানের পর বর্তমান জান্তা বাহিনী নিজ নিজ দেশ থেকে ফ্রান্সের সেনাদের বহিষ্কার করেছে। নাইজার, মালি ও বুরকিনা ফাসো এক সময় ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল।
নাইজারেও সেনাঅভ্যুত্থানের পর সাধারণ মানুষ সড়কে নেমে ফ্রান্স বিরোধী বিক্ষোভ করেছে।