ঘটনাস্থল হালদওয়ানিতে ইন্টারনেট পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে এবং দাঙ্গাকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Published : 09 Feb 2024, 11:38 AM
ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের হালদওয়ানিতে সরকারি জমিতে থাকা একটি মসজিদ ও সংলগ্ন মাদ্রাসা উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় চারজন নিহত ও ২৫০ জন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এ ঘটনার পর শহরজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে, ইন্টারনেট পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে এবং দাঙ্গাকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
মসজিদ ও মাদ্রাসাটি সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত বলে রায় দেয় আদালত। আদালতের আদেশ পাওয়ার পর সরকারি কর্মকর্তারা একদল পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে মসজিদ ও মাদ্রাসা উচ্ছেদ করতে যায়। কিন্তু শহরের বনভুলপুরা এলাকার বাসিন্দারা উচ্ছেদে বাধা দেয়।
এক পর্যায়ে জনতা মারমুখি হয়ে উঠলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। তারা সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করতে শুরু করে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করে। জনতা নিকটবর্তী থানার সামনে রাখা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
সংঘর্ষে ৫০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য, বেশ কয়েকজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পৌরসভার কর্মী ও সাংবাদিক আহত হয়েছে, জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। তবে নিহতদের বিষয়ে গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে কিছু জানানো হয়নি।
প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করে ও প্রাদেশিক সশস্ত্র কনস্ট্যাবুলারির (পিএসি) সদস্যদের উপস্থিতিতে উচ্ছেদ কার্যক্রম আবার শুরু করা হয়।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার প্রহ্লাদ মীনা জানান, আদালতের আদেশ মেনেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।
বুলডোজার দিয়ে মসজিদ ও মাদ্রাসার কাঠামোগুলো ভাঙা শুরু করার পর নারীরাসহ উত্তেজিত এলাকাবাসী প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে। তারা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটে। পুলিশ, পৌরসভার কর্মী ও সাংবাদিকদের দিকে পাথর ছুড়তে থাকে ও বিভিন্ন সম্পত্তি ভাংচুর করে জনতা। তারা ২০টিরও বেশি মোটরসাইকেল ও পুলিশের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।
নৈনিতালের জেলা হাকিম বন্দনা সিং বলেন, “পুলিশ কাউকে উত্তেজিত করেনি, তার হামলার শিকার হয়েছে। একটি থানায় ভাংচুর চালানো হয়েছে এবং দাঙ্গাকারীরা পুলিশ সদস্যদের থানার ভেতরে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে।”
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী জানিয়েছেন, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর উচ্ছেদ অভিযান চালানোর জন্য একটি দলকে ওই এলাকায় পাঠানো হয়েছিল। ওই এলাকার ‘সমাজবিরোধীরা’ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে জানিয়ে ধামী শান্তি বজায় রাখার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
হালদওয়ানিজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এ সময় দাঙ্গা কবলিত এলাকায় স্কুল ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। দাঙ্গাকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি থমথমে হয়ে আছে।
আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অধিকাংশই মাথায় ও মুখে আঘাত পেয়েছেন।