‘বেল্ট অ্যান্ড রোডের’ দেশগুলোকে উদ্ধারে ২৪০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় চীনের

অবকাঠামো নির্মাণে চীন উন্নয়নশীল দেশগুলোকে হাজার হাজার কোটি ডলার দিলেও অসংখ্য প্রকল্প প্রত্যাশিত লাভের মুখ দেখেনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2023, 08:08 AM
Updated : 28 March 2023, 08:08 AM

উন্নয়নশীল ২২টি দেশকে অর্থনৈতিক সংকটের হাত থেকে উদ্ধারে ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে চীন ২৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সহায়তার পরিমাণ আগের তুলনায় বেড়েছে, কিন্তু ঋণ নিয়ে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’উদ্যোগের স্থাপনা বানানো অনেক দেশের পক্ষেই এখন ঋণ পরিশোধ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মঙ্গলবার প্রকাশিত পশ্চিমা এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

বিশ্ব ব্যাংক, হার্ভার্ড কেনেডি স্কুল, এইডডাটা ও কিয়েল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমির গবেষকদের ওই প্রতিবেদন বলা হয়েছে, চীনের এই ঋণের প্রায় ৮০ শতাংশই দেওয়া হয়েছে ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে, মূলত আর্জেন্টিনা, মঙ্গোলিয়া ও পাকিস্তানের মতো মধ্য আয়ের দেশগুলোকে।

অবকাঠামো নির্মাণে চীন উন্নয়নশীল দেশগুলোকে হাজার হাজার কোটি ডলার দিলেও অসংখ্য প্রকল্প প্রত্যাশিত লাভের মুখ না দেখায় ২০১৬ সাল থেকে বেইজিং ঋণ দেওয়ার পরিমাণ ধীরে ধীরে কমিয়ে এনেছে।

২০১০ সালেও অন্যান্য দেশগুলোকে চীন যত ঋণ দিয়েছে, তার মধ্যে ঋণে জর্জরিত দেশগুলোকে দেওয়া ধারের পরিমাণ ছিল ৫ শতাংশেরও কম, ২০২২ সালে তা বেড়ে ৬০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে গবেষণায় জানানো হয়েছে।

এর মধ্যে আর্জেন্টিনা পেয়েছে সবচেয়ে বেশি ঋণ, ১১ হাজার ১৮০ কোটি ডলার। এর পর পাকিস্তান পেয়েছে ৪ হাজার ৮৫০ কোটি, মিশর এক হাজার ৫৬০ কোটি ডলার। ৯টি দেশ ১০০ কোটি ডলারের কম ঋণ নিয়েছে।

পিপলস ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি) সুরিনাম, শ্রীলঙ্কা ও মিশরের মতো অর্থনৈতিক সংকটে পড়া দেশগুলোকে উদ্ধারে ১৭ হাজার কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে; লেনদেনে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তায় ব্রিজ লোন দিয়েছে ৭ হাজার কোটি ডলার। উভয় ঋণের মধ্যে ১৪ হাজার কোটি ডলার পরিশোধের মেয়াদ বাড়াতে হয়েছে, কিংবা পরিশোধের পর তা ফের ঋণ হিসেবে দিতে হয়েছে।

অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কৃত্রিমভাবে নিজেদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অঙ্ককে বড় দেখাতে পিবিওসি-র এই সহায়তাকে কাজে লাগিয়েছে বলেও গবেষণায় সমালোচনা করা হয়েছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স । 

“বিপদে পড়া দেশগুলোকে উদ্ধারে চীনের এই ঋণ অস্বচ্ছ ও সমন্বয়হীন,” বলেছেন গবেষক দলের অন্যতম সদস্য, এইডডাটার পরিচালক ব্র্যাড পার্কস। এইডডাটা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের উইলিয়াম অ্যান্ড মেরি কলেজের গবেষণা ল্যাব।

চীন এখন জাম্বিয়া, ঘানা ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোর সঙ্গে ঋণ পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করছে; এই প্রক্রিয়া ঝুলিয়ে রাখায় তাদের ব্যাপক সমালোচনাও চলছে। এর প্রতিক্রিয়ায় চীন বিপদে পড়া দেশগুলোর ঋণের পুরোটা বা আংশিক মওকুফে বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।