কিছু এলাকায় বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের অর্ধেক হয়েছে মাত্র ৩৬ ঘণ্টায়, এতে নদীগুলোর পানি উপচে বন্যা দেখা দিয়েছে।
Published : 18 May 2023, 05:39 PM
ইতালির এমিলিয়া-রোমাইয়া অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিতে দেখা দেওয়া বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত নয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
পরিস্থিতি নাজুক হয়ে ওঠার পর অঞ্চলটির কয়েক হাজার বাসিন্দাকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে বুধবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইতালির নাগরিক সুরক্ষামন্ত্রী নেলো মুসুমেচি জানিয়েছেন, কিছু এলাকায় বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের অর্ধেক হয়েছে মাত্র ৩৬ ঘণ্টায়, এতে নদীগুলোর পানি উপচে বন্যা দেখা দিয়েছে। তীরবর্তী শহরগুলো ডুবে গেছে এবং কৃষি খামারগুলোর হাজার হাজার একর ফসল তলিয়ে গেছে।
রোববার ইমোলায় ফর্মুলা ওয়ান গ্রান্ড প্রিক্স মোটর রেসিং হওয়ার কথা থাকলেও বন্যার কারণে তা বাতিল করা হয়েছে। শহরটিতেও বন্যা দেখা দিয়েছে এবং এটি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি এলাকার খুব কাছে।
মোটর রেসিংয়ের ভক্তদের বন্যাকবলিত এলাকায় এসে জড়ো হওয়া ঠেকাতে ও জরুরি বিভাগের কর্মীদের ওপর চাপ কমানোর চেষ্টায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
এমিলিয়া-রোমাইয়া অঞ্চলের নেতা স্তেফানো বোনাচ্চিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মোকাবেলা করছি যা সম্ভবত এর আগে দেখা যায়নি। অস্বাভাবিক বেশি পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে, মাটি আর তা শুষে নিতে পারছে না।”
আড্রিয়াটিক সাগর উপকূলবর্তী শহর রাভেন্না বন্যার কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব ওই এলাকা থেকে প্রায় ১৪ হাজার লোককে সরিয়ে নিতে হবে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৩৭টি শহর ও এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে এবং প্রায় ১২০টি ভূমিধসের ঘটনা নথিবদ্ধ করা হয়েছে।
এমিলিয়া-রোমাইয়া অঞ্চলে রাজধানী বোলোনিয়ায় অন্তত একটি সেতু ধসে পড়েছে, কিছু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বহু রেল পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে।
বোনাচ্চিনি জানিয়েছেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে নয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অঞ্চলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইরেনে প্রিওলো জানিয়েছেন, বৃষ্টি ধরে এলেও নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে এমিলিয়া-রোমাইয়া অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টির সময় অন্তত দুই জনের মৃত্যু হয়েছিল।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, কয়েক মাস ধরে খরা চলার কারণে এ এলাকার জমিগুলো শুকিয়ে গেছে, এতে মাটির পানি শুষে নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে আর তাতে ব্যাপক বৃষ্টির পর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
ঘোলা পানির স্রোত ফায়েন্সা, সিসেইনা ও ফোরলি শহরের কেন্দ্রস্থলের ভেতর দিয়ে,পার্ক করে রাখা গাড়ি ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। কিছু দোকানপাট ডুবে গেছে এবং স্থানীয়রা বাড়ির উপরের তলায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।