মালয়েশিয়ায় সরকার গঠনে অচলাবস্থা, সুলতানদের ডাকলেন রাজা

রাজার প্রাসাদ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার ‘কাউন্সিল অব রুলার্স’ এর বিশেষ বৈঠক হবে।

রয়টার্স
Published : 23 Nov 2022, 02:11 PM
Updated : 23 Nov 2022, 02:11 PM

মালয়েশিয়ায় সাধারন নির্বাচনের পর সরকার গঠন নিয়ে নজিরবিহীন সংকট চতুর্থদিনে গড়িয়েছে। এ অচলাবস্থা থেকে উত্তরণে নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছাই নিয়ে আলোচনার জন্য সুলতানদের ‘কাউন্সিল অব রুলার্স’ এর বিশেষ বৈঠক ডেকেছেন রাজা আল-সুলতান আবদুল্লাহ।

প্রাসাদ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার এই বৈঠক হবে।

“মালয় রাজ্যগুলোর শাসকদের এই পরিষদের বৈঠকের উদ্দেশ্য হল, তাদের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া, যাতে রাজা দেশ ও জনগণের কল্যাণের জন্য একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন,” বলা হয়েছে বিবৃতিতে।

মালয়েশিয়ার প্রদেশ ৯ টি। প্রতিটি প্রদেশের প্রাদেশিক প্রধানের পদবী হচ্ছে, সুলতান। এই সুলতানরা সবাই রাজপরিবারের সদস্য। ‘কাউন্সিল অব রুলার্স’ মালয়েশিয়ার রাজা ও সুলতানদের নিয়ে গঠিত। পদাধিকারবলে রাজা আবদুল্লাহ এই পরিষদের প্রধান।

রাজার ভূমিকা মূলত অলঙ্কারিক হলেও সাংবিধানিক অধিকারবলে তিনি কাউকে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করলে তাকে নিয়োগ করতে পারেন।

সাধারণত বড় কোনও সংকটেই কেবল কাউন্সিল অব রুলার্সের বৈঠক হয়। এ মুহূর্তে মালয়েশিয়া তেমন একটি সংকটের মধ্য দিয়েই যাচ্ছে।

দেশটিতে সদ্য অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে কোনও দল বা জোট সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ফল শেষ পর্যন্ত ঝুলন্ত পার্লামেন্টে গিয়ে ঠেকেছে। রাজনৈতিক দলগুলো সরকার গঠনে নিজেদের মধ্যে সমঝোতায়ও ব্যর্থ হয়েছে।

এবারের নির্বাচনের আগে থেকে জনমত জরিপে বিরোধীদলীয় নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম এগিয়ে থাকলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিনের জোটের অভাবনীয় ফলও অনেককে চমকে দিয়েছে। কিন্তু কেনও দলই প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।

মালয়েশিয়ার ২২২ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ছিল ১১২টি আসন। আনোয়ারের দল পায় ৮২টি আসন। আর মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পারিকাতান ন্যাশনাল পায় ৭৩টি আসন।

গত রোববার ছোট দু’টি দলের সমর্থন পাওয়ায় পারিকাতান ন্যাশনাল জোটের আসন সংখ্যা ১০১ হয়েছে বলে জানানো হলেও তা সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসনের চেয়ে কম। এই অচলাবস্থা ভাঙতে রাজা আবদুল্লাহ দু’টি দলকে একসঙ্গে একটি ‘ঐক্য সরকার’ গঠনের পরামর্শ দিয়েছিলেন।

কিন্তু দল দুটি সমঝোতায় পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে। মুহিউদ্দিন বলেছেন, তিনি আনোয়ারের সঙ্গে কাজ করবেন না। রাজা আবদুল্লাহ শেষ সুযোগ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোকে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে এই সময়ের মধ্যে দলগুলোকে জোট গঠন করে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন।

কিন্তু বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বারিসান ন্যাশনাল কোয়ালিশন সরকার গঠনে অপর দুই জোটের একটিকেও সমর্থন দেবে না বলে জানায়। ফলে বাধ্য হয়েই সমস্যা সমাধানে মাঠে নামতে হচ্ছে রাজাকে।