গাজা সিটির এই হাসপাতালটিতে এরইমধ্যে দুই নবজাতক মারা গেছে।
Published : 12 Nov 2023, 09:35 AM
গাজার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল আল-শিফা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। বিদ্যুৎ, পানি ও অক্সিজেন না থাকায় হাসপাতালটি পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। সেখানে নিও-নেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে-এনআইসিইউ ৩৯ থেকে ৪৫টি শিশু রয়েছে। যাদের মধ্যে শনিবার দুইটি শিশু মারা গেছে। বাকিদের জীবনপ্রদীপও নিভু নিভু।
এ অবস্থায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে শনিবার বলা হয়েছে, তারা রোববার আল-শিফা হাসপাতালের শিশুদের উদ্ধার করে নিয়ে আসতে প্রস্তুত আছে।
সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রেয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, “শিফা হাসপাতালের কর্মীদের অনুরোধ করা হচ্ছে যে, আগামীকাল (রোববার) আমরা শিশু বিভাগের শিশুদের একটি নিরাপদ হাসপাতালে যেতে সাহায্য করতে প্রস্তুত আছি। এজন্য প্রয়োজনীয় সব রকম সহায়তা আমরা প্রদান করব।”
ইসরায়েলের দাবি, গাজার হামাস যোদ্ধারা আল-শিফা হাসপাতালের নিচে এবং চারপাশে তাদের কমান্ড সেন্টার গঠন করেছে। তাই চিকিৎসক, রোগী ও হাসপাতাল প্রাঙ্গনে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার উদ্বাস্তুকে তারা সরে যেতে বলেছে। যাতে তারা সেখানে হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে পারে।
হামাস যোদ্ধারা হাসপাতালটিকে এভাবে ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন, অনেক রোগী আছেন যাদের সরিয়ে নিতে গেলে মারা পড়তে পারেন।
গাজা সিটিতে অবস্থিত আল-শিফার একজন সার্জন বিবিসিকে অন্তত ২০টি নবজাতক শিশুর ছবি পাঠিয়েছেন। যাদের হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষে রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় সেখানকার এনআইসিইউ পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছেন, দুই নবজাতক এরইমধ্যে মারা গেছে। বাকিরাও যেকোনো সময় মারা যেতে পারে।
হাসপাতালের ভেতরের চিত্রও ভয়াবহ এবং বিভ্রান্তিকর। হাসপাতাল ঘিরে যুদ্ধ চলছে। যাদের সম্প্রতি অস্ত্রোপচার হয়েছে তাদের এখনই উদ্ধার করা সম্ভব না। এদিকে হাসপাতালের ভেতর মৃতদেহ জমা হতে শুরু করেছে। সেগুলো কবর দেওয়ার জন্য সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ ভয়ে আল-শিফা হাসপাতাল প্রাঙ্গনে আশ্রয় নিয়েছিল। যেখানে গত দুইদিন ধরে তুমুল লড়াই চলছে।
সার্জন মারওয়ান আবু সাদা বিবিসিকে বলেন, “প্রতিটি সেকেন্ডে এখানে গুলি ও বোমা বর্ষণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।
“আমরা এই মৃতদেহগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্যও কোনো বিরতি পাচ্ছি না। বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালের মর্গ কাজ করছে না।”
গাজার অবরুদ্ধ আল-শিফা হাসপাতালে ২ নবজাতকের মৃত্যু, ঝুঁকিতে আরো বহু প্রাণ