ইমরানের ওপর হামলার পর পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভের ডাক

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা আসাদ উমর শুক্রবার দেশজুড়ে প্রতিবাদে নামার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, ইমরান খানের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2022, 06:55 AM
Updated : 4 Nov 2022, 06:55 AM

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের লংমার্চ চলার মধ্যে গুলির ঘটনায় তিনিসহ দলের কয়েকজন নেতা আহত এবং এক কর্মী নিহত হওয়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভে নামার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।

পিটিআই নেতা আসাদ উমর বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর দল দেশজুড়ে প্রতিবাদে নামবে। ইমরান খানের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে। এক টুইটে তিনি এই বার্তা দেন বলে জানিয়েছে দ্য ডন।

ওদিকে, পাঞ্জাবের বার কাউন্সিলও (পিবিসি) শুক্রবার ইমরান খান হত্যা প্রচেষ্টার প্রতিবাদে প্রদেশজুড়ে আদালত বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইনজীবীরা আজ আদালতে হাজিরা দেবে না। ইমরানের ওপর হামলা স্পষ্টতই বিচার এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতা।

বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবে ওয়াজিরাবাদের সমাবেশে ইমরানের ওপর হামলার পরপরই পাকিস্তানজুড়ে পিটিআইয়ের কর্মী ও সমর্থকরা প্রতিবাদে নামে। তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এতে বিভিন্ন শহরে ব্যাপক জানযট সৃষ্টি হয়।

হামলার ঘটনায় ইমরানের পায়ে গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ ইমরানকে লাহোরের শওকত খানম হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার চিকিৎসক ফয়সাল সুলতান জানিয়েছেন, পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের অবস্থা স্থিতিশীল। তিনি ভাল হয়ে উঠছেন।

পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরি বলেন, হামলার সময় যারাই সামনের সারিতে ইমরান খানের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারাই গুলি খেয়েছেন। ইমরান খানের লং মার্চ এখন কীভাবে হবে তা নিয়ে পিটিআই কর্মকর্তারা শুক্রবার আলোচনায় বসবেন বলে জানান তিনি। এই লংমার্চ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন ফাওয়াদ। ইমরানের ওপর হামলার প্রতিবাদে তিনি ‘প্রতিটি পাকিস্তানিকে’ বিক্ষোভে নামার আহ্বান জানান।

ইমরান খান অবিলম্বে নির্বাচন দেওয়ার দাবিতে এ কর্মসূচি দিয়েছিলেন। ইমরানকে নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করার পর এ কর্মসূচি দেন তিনি। বিদেশি নেতাদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার গোপনে বিক্রি করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কমিশন ওই পদক্ষেপ নেয়।

ইমরান খান চাইছেন সরকার দ্রুত নির্বাচন করুক। কিন্তু সরকার মেয়াদপূর্ণ করে যথাসময়ে নির্বাচন দিতে চাইছে। এ পরিস্থিতিতে ইমরান খান লংমার্চ শুরু করার পর তার প্রাণনাশের চেষ্টা চলল।

ইমরানের ওপর এ হামলা দেশের রাজনীতি এবং রাজনৈতিক আবহে কী পরিণতি বয়ে আনবে এবং দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন কোনও কোনও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

অনাস্থা ভোটে ইমরান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতার ভয় বেড়েছে। আগামী নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এখন আরও বাড়ল।

ইমরানের লংমার্চ শান্তিপূর্ণই ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার যা ঘটল তার প্রতিবাদে দেশ এরই মধ্যে বিক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেছে। এই বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতি পাকিস্তানকে এক বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।