লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় দুই সাংবাদিকসহ নিহত ৪

লেবাননের সীমান্ত এলাকার একটি গ্রামে হামলায় এক টিভি প্রতিবেদক ও ক্যামেরাম্যানসহ আরও একজন নিহত হন এবং পূর্বাঞ্চলের একটি এলাকায় নিহত হন এক নারী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2023, 07:18 PM
Updated : 21 Nov 2023, 07:18 PM

লেবাননে ইসরায়েলের রকেট হামলায় দুই সাংবাদিকসহ অন্তত চারজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে গুলিবিনিময় বাড়তে থাকার মধ্যে এ ঘটনা ঘটল।

বিবিসি জানায়, লেবাননের সীমান্ত এলাকার তায়ির হারফা গ্রামে এ হামলায় আল মায়াদিন টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদক এবং ক্যামেরাম্যানসহ আরেকজন মানুষ নিহত হয়েছে। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।

এই তিনজন ছাড়াও পূর্বাঞ্চলের কারকেলায় আরও এক বয়স্ক নারী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা লেবাননের সীমান্ত এলাকায় হুমকি ঠেকাতে কাজ করছে এবং মানুষ নিহতের ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।

এর আগে ইসরায়েলের বিমান হামলা নিয়ে সেনাবাহিনী বলেছিল, সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসী সেল এবং লেবাননের গেরিলা দল হিজবুল্লাহর অবস্থানকে নিশানা করে হামলা চালানো হয়েছে। ছয়সপ্তাহ আগে গাজায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধের শুরু থেকেই হিজবুল্লাহ বারবারই ইসরায়েল সীমান্তে মর্টার শেল এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।

বৈরুতের আরবি-ভাষী টিভি চ্যানেল আল মায়াদিন বলেছে, তাদের প্রতিবেদক ফারাহ ওমর এবং ক্যামেরাম্যান রাবিহ আল-মামারিকে ইচ্ছাকৃতভাবেই হামলার নিশানা করা হয়েছে। কারণ, সীমান্ত থেকে ২ কিলোমিটার দূরের তায়ির হারফা গ্রাম থেকে তারা সংবাদ পাঠাচ্ছিলেন।

সেখানে ফারাহ এবং রাবিহ এর ওপর ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান থেকে দুটো রকেট ছোড়া হয়। তারা তখন খবরের সরাসরি সম্প্রচার শেষ করেছিলেন মাত্র। দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের সর্বশেষ বোমা হামলার খবর দিয়েছিলেন তরা।

স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ছবিতে দেখা গেছে, দুই সাংবাদিকের লাশ মাটিতে পড়ে আছে। আর তাদের কাছেই জ্বলছে স্ট্যান্ডে দাঁড় করিয়ে রাখা ক্যামেরা।

লেবাননের রাষ্ট্রপরিচালিত ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) বলেছে, অরেকজন ব্যক্তি যিনি এ হামলায় নিহত হয়েছেন, তিনি হলেন, হুসেইন আকিল। তিনি একজন কন্ট্রিবিউটর ছিলেন বলে জানিয়েছেন আল মায়াদিন টিভির পরিচালক।

এনএনএ জানায়, লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাবজিব মিকাতি ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “এ হামলাই আবারও প্রমাণ করেছে যে, ইসরায়েলের অপরাধের কোনও সীমা নেই। তাদের একমাত্র লক্ষ্য হল, গণমাধ্যমকে চুপ করিয়ে দেওয়া; যে গণমাধ্যম তাদের অপরাধ এবং হামলার ঘটনাকে সামনে নিয়ে আসে।”

ওদিকে, ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, “তাদের সেনারা তায়ির হারফা গ্রামের ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার পূর্বে জিব্বাইন এলাকায় হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসী সংগঠনের রকেট উৎক্ষেপণ এলাকা থেকে আসা হুমকির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।

“এলাকাটিতে সক্রিয় সন্ত্রাসী তৎপরতা আছে। সেখানে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। ওই এলাকায় কারও উপস্থিত থাকাটা বিপজ্জনক। মানুষ নিহতের ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

আইডিএফ এর আগেও বারবারই বলে এসেছে যে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সাংবাদিকদের হামলার নিশানা করে না। কিন্তু গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে সাংবাদিকের ওপর এটি ইসরায়েলের তৃতীয় হামলা বলেই মনে করা হচ্ছে।