শুক্রাণু-ডিম্বাণু ছাড়াই ‘মানব ভ্রুণের পূর্ণাঙ্গ মডেল’ তৈরি

এই ভ্রুণ মডেল তৈরির উদ্দেশ্য হল মানুষের জীবনের একেবারে শুরুর দিকের মুহূর্তগুলো কার্যকর উপায়ে বোঝা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2024, 12:58 PM
Updated : 10 Feb 2024, 12:58 PM

ডিম্বাণু, শুক্রাণু কিংবা গর্ভাশয় ব্যবহার না করেই ‘মানব ভ্রুণের পূর্ণাঙ্গ মডেল’ তৈরি করেছেন গবেষকরা, যার মাধ্যমে মানব প্রজনন প্রক্রিয়া ও উন্নত ফার্মাসিউটিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষায় আরও অগ্রগতির পথ তৈরি হল।

ইসরায়েলের ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউটের গবেষকরা বলছেন, মানব শরীরের স্টেম সেল ব্যবহার করে তারা এই ‘ভ্রুণ মডেলের’ উন্নয়ন ঘটিয়েছেন, যা দেখতে ১৪ দিনের বাস্তব ভ্রুণের মতই। এমনকি এটি হরমোনও নিঃসরণ করছে, যার মাধ্যমে গবেষণাগারে প্রেগন্যান্সি পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসছে।

এই ভ্রুণ মডেল তৈরির উদ্দেশ্য হল মানুষের জীবনের একেবারে শুরুর দিকের মুহূর্তগুলো কার্যকর উপায়ে বোঝা। একটি শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিষেক ঘটার পর থেকে প্রথম সপ্তাহে শরীরে নাটকীয় পরির্ব্তন ঘটতে থাকে। বিভিন্ন কোষ থেকে গর্ভাশয়ে এমন কিছু তৈরি হয়, যা পরে মানব শিশুর আকার ধারণ করে। গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে গর্ভপাত বা জন্মগত নানা ত্রুটির অনেক বেশি সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু শুরুর দিকে এই সমস্যাগুলো তেমন একটা বোঝা যায় না।

ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের অধ্যাপক জ্যাকব হান্না বলেন, “এই ভ্রুণ মডেল হল একটি ‘ব্ল্যাক বক্স’ এবং এটি গতানুগতিক কিছু নয়…আমাদের জ্ঞান খুব সীমিত।”

ভ্রূণ গবেষণা যৌক্তিক ও প্রযুক্তিগতভাবে নানা সমস্যায় ভরা। যদিও এখন বাস্তব ভ্রুণ বিকাশের প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ভ্রুণ গবেষণায় দ্রুত উন্নয়ন ঘটেছে। নেচার জার্নালে প্রকাশিত ইসরায়েলি গবেষকদের এই মডেলটিকে প্রথম ‘পূর্ণাঙ্গ ভ্রুণ মডেল’ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। কারণ, বাস্তব ভ্রণ গঠনের সমস্ত দিকের সঙ্গে মিল রেখে স্টেম সেল থেকে পূর্ণাঙ্গ ভ্রুণ কাঠামো তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা।

অধ্যাপক জ্যাকব হান্না বলেন, “এই মডেলটি সত্যিই ১৪ দিনের মানব ভ্রুণের একটি টেক্সটবুক ছবি, যা আগে কখনও তৈরি করা যায়নি।”

শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর পরিবর্তে এই মডেল তৈরিতে মানুষের স্টেম সেল নেওয়া হয়েছে। এরপর সেখান থেকে শরীরের যে কোনো সম্ভাব্য টিস্যু তৈরির জন্য সেলগুলোকে কাজে লাগানো হয়েছে। মানব ভ্রুণের শুরুর দিকে যে চার রকমের সেল পাওয়া যায়, স্টেম সেলকে ভেঙে ওই সেলগুলোতে পরিণত করতে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে। সংবাদ সূত্র: বিবিসি

(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)