উত্তর কোরিয়া ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রাশিয়াকে যে অস্ত্র এবং সেনা পাঠিয়েছে তার বিনিময়ে পিয়ংইয়ংকে এই তেল সরবরাহ করেছে মস্কো।
Published : 22 Nov 2024, 05:32 PM
রাশিয়া এবছর মার্চ মাস থেকে এ পর্যন্ত ১০ লাখ ব্যারেলের বেশি তেল উত্তর কোরিয়াকে সরবরাহ করেছে। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক অলাভজনক গবেষণা গোষ্ঠী ‘ওপেন সোর্স সেন্টারের’ স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
উত্তর কোরিয়া ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রাশিয়াকে যে অস্ত্র এবং সেনা পাঠিয়েছে তার বিনিময়ে পিয়ংইয়ংকে এই তেল সরবরাহ করেছে মস্কো। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এবং নেতৃস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা বিবিসি-কে একথা বলেছেন।
এই তেল সরবরাহ জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন। নিষেধাজ্ঞার আওতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উত্তর কোরিয়ায় তেল বিক্রি করা মানা। কেবল অল্প পরিমাণে তেল বিক্রির ব্যাপারে কিছু ছাড় আছে।
উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক কর্মসূচি উন্নয়ন থেকে নিবৃত্ত করতে দেশটির অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টাতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
বিবিসি-র হাতে এসেছে উত্তর কোরিয়াকে রাশিয়ার তেল সরবরাহের স্যাটেলাইট চিত্র। এতে দেখা গেছে, গত ৮ মাসে উত্তর কোরিয়ার এক ডজনেরও বেশি তেল ট্যাঙ্কার মোট ৪৩ বার রাশিয়ার ফার ইস্টের একটি তেল টার্মিনালে পৌঁছেছে।
সমুদ্রে জাহাজগুলোর আরও কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, ট্যাঙ্কারগুলো খালি হয়ে টার্মিনালে ভিড়ছে এবং প্রায় পূর্ণ হয়ে টার্মিনাল ছেড়ে যাচ্ছে।
উত্তর কোরিয়া বিশ্বের একমাত্র দেশ, যাদের খোলা বাজারে তেল কেনার অনুমতি নেই। জাতিসংঘ দেশটির জন্য যে পরিমাণ তেল পাওয়ার নিয়ম করে দিয়েছে (বছরে ৫ লাখ ব্যারেল),তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তর কোরিয়াকে তেল সরবরাহের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ওপেন সোর্স সেন্টারের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ৭ মার্চ প্রথম উত্তর কোরিয়ায় তেল পাঠায় রাশিয়া। এর সাত মাস পর জানা যায় যে, রাশিয়াকে অস্ত্র পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। এই ধারা এখনও অব্যাহত আছে।
সবশেষ গত ৫ নভেম্বরের উত্তর কোরিয়ার হাজার হাজার সেনাকে ইউক্রেইনে যুদ্ধের জন্য রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।
ওপেন সোর্স সেন্টারের বিশেষজ্ঞ বায়ারন বলেছেন, “কিম জং উন যখন ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি লাইফলাইন দিচ্ছেন, রাশিয়া তখন নীরবে উত্তর কোরিয়াকেও নিজস্ব একটি লাইফলাইন দিচ্ছে।
তেলের অবিরাম প্রবাহ উত্তর কোরিয়াকে স্থিতিশীলতার একটি স্তরে পৌঁছে দিয়েছে, যা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে দেশটির ছিল না। ”