থাইল্যান্ডের নির্বাচনে বিরোধীদের কাছে পরাস্ত সামরিক দলগুলো

সাম্প্রতিক ইতিহাসে ডজনখানেক সামরিক অভ্যুত্থান দেখা থাইল্যান্ডের জন্য এবারের নির্বাচনকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2023, 04:34 AM
Updated : 15 May 2023, 04:34 AM

থাইল্যান্ডের নির্বাচনে সামরিক বাহিনীর মিত্র দলগুলোকে হারিয়ে চমকপ্রদ জয় পেয়েছে দুই বিরোধীদল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি ও পুয়ে থাই পার্টি ।

রোববারের নির্বাচনের ৯৯ শতাংশ ভোট গণনার পর এই দুটি দল অন্যদের ছাড়িয়ে অনেকদূর এগিয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এই ভোটের মাধ্যমে থাইল্যান্ডের ভোটাররা দেশটির সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচাকে সমর্থনকারী দলগুলো জনসমর্থনের দিক থেকে বেশ পেছনে পড়ে গেছে। 

এখন দুই বিরোধীদল, মুভ ফরোয়ার্ড ও পুয়ে থাই জোট গঠনের জন্য আলোচনা শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক ইতিহাসে ডজনখানেক সামরিক অভ্যুত্থান দেখা থাইল্যান্ডের জন্য এবারের নির্বাচনকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

২০১৪ সালে হওয়া সর্বশেষ অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ছিলেন এখনকার প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ, এবার তিনি আরেক মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হতে লড়ছিলেন। কিন্তু সামরিক বাহিনী বিরোধী মুভ ফরোয়ার্ড ও পুয়ে থাই প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

ভোটের প্রাথমিক ফলাফলে সাবেক প্রযুক্তি নির্বাহী পিটা লিমজারোয়েনরাট (৪২) নেতৃত্বাধীন মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি সবচেয়ে এগিয়ে আছে, তাদের পরেই আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা পায়েতোংতার্ন সিনাওয়াত্রা নেতৃত্বাধীন পুয়ে থাই পার্টি।

রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী, এই দুই দল জান্তার রাজনৈতিক বাহন পালাং প্রচারত ও সেনাবাহিনী সমর্থিত থাই নেশন পার্টির চেয়ে তিনগুণ বেশি আসনে জয়ী হওয়া পথে রয়েছে।  

পিটা এই ফলাফলকে ‘দারুণ উদ্দীপনামূলক’ বলে বর্ণনা করে সরকার গঠন করার সময় তার দল সামরিক বাহিনী সমর্থিত দলগুলোর বিরোধিতা করে যাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তারা পুয়ে থাইয়ের সঙ্গে আলোচনার করার পদক্ষেপ নেবে এবং জোট গঠনের চুক্তি তাদের পরিকল্পনায় আছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন  তিনি।

পুয়ে থাইয়ের নেতা পায়েতোংতার্ন সিনাওয়াত্রা মুভ ফরোয়ার্ডকে তাদের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, “আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারবো।”   

তিনি বলেছেন, “আমরা মুভ ফরোয়ার্ডের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত, এখন আমরা আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করছি।”

তবে সাফল্য সত্ত্বেও মুভ ফরোয়ার্ড ও পুয়ে থাই পার্টিকে ক্ষমতায় যেতে আরও লড়াই করতে হতে পারে।

দেশটিতে ২০১৭ সালে সামরিক বাহিনীর শাসনামলে হওয়া সংবিধানে নির্বাচন বহির্ভূত অনেক কর্তৃপক্ষ চাইলে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের ক্ষমতায় আরোহণ আটকেও দিতে পারে।

ওই সংবিধানে আড়াইশ সদস্যের একটি সেনেট বানানো হয়েছে, যার সদস্যরা নতুন প্রধানমন্ত্রী বা সরকার বেছে নিতে ভোট দিতে পারবে। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সেনেটের এখনকার সদস্যরা সামরিক বাহিনীপন্থি, তাদেরকে সবসময়ই বর্তমানের সামরিক বাহিনীঘেঁষা সরকারের পক্ষে এবং বিরোধীদের বিপক্ষে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নির্বাচিত ৫০০ এমপি ও সেনেটের ২৫০ সদস্যের ভোটে নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে কোনো দল বা জোট যদি সেনেটের প্রভাবকে পাশ কাটিয়ে সরকার গঠন করতে চায় তাহলে তাদেরকে নিম্নকক্ষের ৫০০ আসনের মধ্যে অন্তত ৩৭৬টিতে জিততে হবে।

আগের খবর:

Also Read: থাইল্যান্ডে ভোটগ্রহণ শুরু, পাল্লা ভারী থাকসিনের মেয়ের