২০২০ সালে বিষপ্রয়োগের শিকার হওয়ার পর সেরে ওঠার সময় নাভালনি স্মৃতিগ্রন্থ লেখা শুরু করেছিলেন। গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার কারাগারে তিনি মারা যান।
Published : 12 Apr 2024, 05:41 PM
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের কট্টর সমালোচক ও বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির কারাগারে যাওয়া এবং মৃত্যুবরণ করার আগে লিখে যাওয়া স্মৃতিকথা প্রকাশিত হতে চলেছে এবছর অক্টোবর মাসে।
নাভালনি নিজ হাতে এই স্মৃতিকথা লিখেছিলেন বলে বিবিসি-কে জানিয়েছে প্রকাশনা কোম্পানি ভিন্টেজ। ২০২০ সালে বিষপ্রয়োগের শিকার হওয়ার পর সেরে ওঠার সময় নাভালনি এই স্মৃতিগ্রন্থ লেখার কাজ শুরু করেছিলেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার কারাগারে মারা যান নাভালনি। উগ্রপন্থায় উস্কানি, অর্থায়ন এবং একটি উগ্রপন্থি সংগঠন প্রতিষ্ঠার অভিযোগে গতবছর অগাস্টে নাভালনিকে নতুন করে ১৯ বছরের জেল দেওয়া হয়েছিল।
সেই সাজাই খাটছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই ব্যাপকভাবে মনে করা হয়ে থাকে।
প্রকাশনা কোম্পানি ভিন্টেজ বলেছে, প্যাট্রিয়ট’ শিরোনামে নাভালনির এই স্মৃতিগ্রন্থে থাকবে তার পুরো জীবনকাহিনী- তার যৌবনকাল, মানবাধিকারের জন্য তার আহ্বান, বিয়ে ও পরিবার এবং তাকে চুপ করিয়ে দিতে বিশ্বের এক সুপারপাওয়ারের দৃঢ়প্রতিজ্ঞার মুখেও রাশিয়ার গণতন্ত্র ও মুক্তির জন্য তার প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা- এ সবকিছুই থাকবে।
তাছাড়া, নাভালনির দৃঢ়বিশ্বাস ছিল যে, ‘পরিবর্তনকে রুখে দেওয়া যায় না, এটি আসবেই।” তার সেই প্রত্যয়েরও প্রতিফলন ঘটেছে স্মৃতিকথায়।
আগামী ২২ অক্টোবরে রাশিয়ান ভাষার পাশাপাশি অন্তত ১১ টি ভিন্ন ভাষায় বইটি প্রকাশ করা হবে।
নাভালনির বিধবা স্ত্রী ইউলিয়া বলেছেন, “এ বই কেবল নাভালনির জীবনেরই নয়, বরং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তার লড়াইয়ের অটুট অঙ্গীকারের সাক্ষ্য। যে লড়াইয়ের জন্য তিনি সবকিছু, এমনকী তার জীবনও হারিয়েছেন।”
এই স্মৃতিকথা নাভালনির স্মৃতির সম্মানার্থে প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে অন্যরা সঠিক কিছু করার জন্য উঠে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ইউলিয়া।
অ্যালেক্সি নাভালনি কেবল প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচকই ছিলেন না। পুতিনের এক নম্বর প্রতিদ্বন্দ্বীও মনে করা হত তাকে। ২০২১ সাল থেকে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মুখ খোলার জন্য শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে তাকে। সে সময় তাকে জেলে ঢোকানো হয়।
গত বছর ডিসেম্বরের দিকেও একবার তার রহস্যজনক মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল। আচমকাই তার কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। রুশ সরকার গোপনে নাভালনিকে অজ্ঞাত জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে এবং অত্যাচার করে মেরে ফেলা হয়েছে বলে জল্পনা সৃষ্টি হয়। পরে জানা যায়, তিনি বন্দি ছিলেন সাইবেরিয়ার কারাগারে।
রাশিয়ার দুর্নীতি ও শাসনব্যবস্থার কড়া সমালোচক ছিলেন নাভালনি। রাশিয়ায় তিনি কয়েক যুগ ধরেই সরকার ও শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলে আসছিলেন। দেশজুড়ে এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় আন্দোলনও করেছিলেন। একারণে, কারাগারে তার মৃত্যুর পর তিনি হত্যার শিকার হয়ে থাকতে পারেন বলে জল্পনা সৃষ্টি হয়।