“এটা কি কোনো বিজ্ঞাপন নাকি হুমকি?,” সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এক ব্যবহারকারী এমনটাই লিখেছেন।
Published : 16 Jan 2025, 07:02 PM
আইফেল টাওয়ারের দিকে উড়োজাহাজ ছুটে যাচ্ছে বিজ্ঞাপনে এমন চিত্র দেখিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে পাকিস্তানের পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স পিআইএ।
ফ্রান্সের রাজধানীতে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের (পিআইএ) ফ্লাইট ফের চালু হচ্ছে, এটা প্রচারের উদ্দেশ্যে দেওয়া বিজ্ঞাপনটির ক্যাপশনে লেখা ছিল- ‘প্যারিস, আজ আমরা আসছি।’
এই বিজ্ঞাপন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনেককে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া সন্ত্রাসী হামলার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
“এটা কি কোনো বিজ্ঞাপন নাকি হুমকি?,” সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এক ব্যবহারকারী এমনটাই লিখেছেন। ক্ষুদ্ধ আরেক ব্যবহারকারী পিআইএ-র উদ্দেশ্যে লিখেছে, “তোমাদের মার্কেটিং ম্যানেজারকে বরখাস্ত করো।”
দিনকয়েক আগে এক্সে প্রকাশের পর এখন পর্যন্ত বিজ্ঞাপন চিত্রটি দুই কোটি ১০ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে, চলছে তুমুল সমালোচনাও।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। উপপ্রধানমন্ত্রী ইশহাক দার নিজেও বিজ্ঞাপন চিত্রটির কড়া সমালোচনা করেছেন বলে পাকিস্তানের জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় সন্ত্রাসীরা যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে তা দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসির পেন্টাগন ও নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে হামলা চালিয়েছিল, যে ঘটনায় প্রাণ যায় প্রায় ৩ হাজার মানুষের।
ওই হামলার তথাকথিত মাস্টারমাইন্ড বা মূল পরিকল্পক খ্যাত খালিদ শেখ মোহাম্মদ ২০০৩ সালে পাকিস্তানে গ্রেপ্তার হন।
যে উগ্রপন্থি নেটওয়ার্ক এই হামলার পরিকল্পনায় ছিল, সেই আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেনও ২০১১ সালে পাকিস্তানেই মার্কিন বাহিনীর হাতে নিহত হন।
পাকিস্তানি এক সাংবাদিক ওমর কুরাইশি বলেছেন, পিআইএ-র বিজ্ঞাপনটি তাকে ‘স্তম্ভিত’ করে দিয়েছে।
“বিমান কর্তৃপক্ষ কি এটি যাচাই করে দেখেনি? তারা কি ৯/১১-র দুঃখজনক ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত নয়? যেখানে ভবনে হামলায় বিমান ব্যবহৃত হয়েছিল। তারা কি ভাবেনি, এই বিজ্ঞাপনটি একই ধরনের মনে হতে পারে?” এক্সে এমনটাই লিখেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে পিআইএ এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।
এক্স ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত পিআইএ-র আরেকটি বিজ্ঞাপনের দিকেও আঙুল তুলেছেন; ওই বিজ্ঞাপনে টুইন টাওয়ারের ওপর একটি যাত্রীবাহী বিমানের ছায়া দেখা যাচ্ছিল।
পাকিস্তানি এই এয়ারলাইন্সের সঙ্গে বিতর্কের যোগ অবশ্য নতুন কিছু নয়।
২০১৭ সালে বিমানের পাশে এয়ারলাইন্সটির কর্মীদের ছাগল কোরবানি নিয়েও পাকিস্তানি এ পতাকাবাহী ক্যারিয়ারটি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনার পর ‘দুর্ভাগ্য এড়াতে’ ওই ছাগল কোরবানি করা হয় বলে সেসময় কর্মীরা জানিয়েছিলেন।
২০১৯ সালে কোম্পানিটি তাদের ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের ওজন কমাতে নির্দেশ দিয়েও বিতর্কের মুখে পড়ে। সেসময় ‘অতিরিক্ত ওজন’ কমাতে বিমান কর্তৃপক্ষ ৬ মাস সময় বেধে দেয়, নির্দেশ না মানলে ছিল চাকরিচ্যুতির হুমকিও।