খেরসনে রুশ সেনা প্রত্যাহার: গর্বিত হলেও সতর্ক ইউক্রেইন

রুশ বাহিনীর খেরসন ছেড়ে যাওয়া নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ না করে সর্তক অবস্থান নিয়েছে ইউক্রেইন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Nov 2022, 05:27 PM
Updated : 10 Nov 2022, 05:27 PM

গুরুত্বপূর্ণ নগরী খেরসন ছেড়ে যেতে শুরু করেছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেইনের জন্য এটি নিশ্চিতভাবে গর্বের বিষয় হলেও রুশ সেনা প্রত্যাহার নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ না করে সর্তক অবস্থান নিয়েছে দেশটি।

ইউক্রেইনের জনপ্রিয় ব্লগার এবং প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্ট্রোভিচ ফেইসবুকে এক পোস্টে লেখেন, হয়ত ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীই রাশিয়াকে সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য করেছে।

‘‘রাশিয়ার সেনারা খেরসন ছেড়ে যায়নি। ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের খেরসন থেকে বের করে দিয়েছে।”

তবে নিপ্রো নদীর ডান পাড়ে যেখানে খেরসন নগরীর অবস্থান সেখানে আরও কিছুদিন যুদ্ধ চলবে বলেই বিশ্বাস এই ব্লগারের।

ওদিকে, ইউক্রেইনের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ইউক্রেইনস্কা প্রাভদা’ রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণাকে তাদের ‘চালাকি’ কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

তাদের খবরে বলা হয়, ‘‘যদি শোইগুর (রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী) বক্তব্য সত্য হয়, তবে (নিপ্রো নদীর) বাম পাড় অতিক্রম করতে রুশ বাহিনীর অন্তত কয়েকদিন লাগার কথা।”

ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভও রাশিয়ার সেনা সরানোর প্রকাশ্য নির্দেশ নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করেছে। কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, রাশিয়া খেরসনকে ‘মৃত্যু নগরীতে’ পরিণত করতে পারে।

ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ ভালেরি জালুঝনি অবশ্য রুশ সেনাদের খেরসন ছেড়ে যাওয়া বা না যাওয়ার বিষয়ে কোনওে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি শুধু বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় তার বাহিনী বড় অগ্রগতি অর্জন করেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেইনের সেনাবাহিনী খেরসন নগরী থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তরের গুরুত্বপূর্ণ শহর স্নাইহুরিভকা পুনর্দখলের ঘোষণা দিয়েছে।

স্নাইহুরিভকা শহরটি খেরসন অঞ্চলের ঠিক বাইরে। প্রতিবেশী মিকোলাইভ এলাকার বৃহৎ রেলস্টেশনগুলোর একটি এটি। গত সেপ্টেম্বর মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন খেরসনের যেসব এলাকা রাশিয়া সঙ্গে সংযুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন সেগুলোতে স্নাইহুরিভকাও ছিল।

গত ২৪ ঘণ্টায় নিপ্রো নদীর পশ্চিম পাড়ে দুইটি যুদ্ধক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জনের ঘোষণাও দিয়েছেন জেনারেল জালুঝনি।

তিনি বলেছেন, তার বাহিনী নিজেদের অবস্থান থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে সাত কিলোমিটার অগ্রসর হয়েছে। এদিক দিয়ে তারা বেরিস্লাভার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

পশ্চিমদিকেও তারা মাত্র একদিনে সাত কিলোমিটার অগ্রসর হয়েছে। অর্থাৎ, খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে ইউক্রেইনীয় বাহিনী মোট ২৬৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুনর্দখল করেছে।

রুশ সেনাদের খেরসন ছেড়ে যাওয়াকে ইউক্রেইনের জন্য ‘দৃঢ় অগ্রগতি’ বলে বর্ণনা করেছেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে এ বিষয়ে টেলিফোনে তিনি কথা বলেছেন বলে জানায় বিবিসি।

সুনাকের একজন মুখপাত্র বলেন, তবে উভয় নেতা এও বলেছেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্তা না খেরসন নগরীতে ইউক্রেইনের পতাকা উত্তোলন না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত (রুশ সেনা) প্রত্যাহার নিয়ে সতর্ক থাকাটাই উচিত হবে’।

প্রধানমন্ত্রী সুনাক ইউক্রেইনের সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন এবং দেশটির প্রতি যুক্তরাজ্যের অটল সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।