কাজের খোঁজে পাকিস্তান ছাড়ছে শিক্ষিত তরুণরা

গত বছর আট লাখের বেশি পাকিস্তানি চাকরির খোঁজে দেশ ছেড়েছে বলে জানিয়েছে অভিবাসন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক ব্যুরো।

রয়টার্স
Published : 2 Feb 2023, 12:56 PM
Updated : 2 Feb 2023, 12:56 PM

উন্নত জীবন ও ভবিষ্যত সমৃদ্ধির প্রত্যাশায় চাকরির খোঁজে চার মাস আগে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন পাকিস্তানি তরুণ তাহির (ছদ্মনাম)। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে।

কেবল তাহিরই নন, পাকিস্তানের হাজারো তরুণ এবং শিক্ষিত শ্রমিকরা দেশ ছেড়ে যেতে শুরু করেছে। গত বছর আট লাখের বেশি পাকিস্তানি চাকরির খোঁজে দেশ ছেড়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির অভিবাসন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক ব্যুরো।

কোভিড মহামারীর আগে ২০১৯ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬২৫,৮৭৬। তার আগের বছর পাকিস্তান ছেড়েছিল আরও কম; ৩৮২,৪৩৯ জন। তাহিরের মতো আরও অনেকে শিক্ষা ও অন্যান্য কারণে পাকিস্তান ছাড়ছেন। তারা আর দেশে ফিরে আসেন না।

অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া পাকিস্তানে গত বছরের বিপর্যয়কর বন্যা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে খাবারের সংকট। বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতি। মুদ্রাবাজারে ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের রুপির দরপতন হচ্ছে।

এই অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ নিয়ে সংকট সামলানোর চেষ্টা করছে তারা। এ পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষিত, মেধাবী তরুণদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা সামনের দিনগুলোতে পাকিস্তানকে আরও ভোগাতে পারে বলে উদ্বিগ্ন কর্মকর্তারা।

পাকিস্তানের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও বিশেষ উদ্যোগ বিষয়ক মন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, “শিক্ষিত তরুণদের এভাবে দলে দলে দেশ ছেড়ে যাওয়া খুবই উদ্বেগের বিষয়। তরুণদেরকে দেশেই যথাযথ কাজের পরিবেশ দিয়ে তাদের দেশ ছাড়া রোধ করাটা আমাদের দায়িত্ব।”

এজন্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এতে মেধাবী তরুণদের দেশ ছাড়ার প্রবণতা কমবে বলেই আশা করছে সরকার।”

তবে পাকিস্তানে বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট শুরুর আগেও দেশটির অনেক শ্রমিক বিদেশে চলে যেতেন। কম আয় ও জীবনযাত্রামানের উন্নতির সুযোগ কম থাকায় তাদের অনেকেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে দেশ ছাড়তেন।

গত বছর জুনে গ্যালাপ পাকিস্তান ও গিলানি ফাউন্ডেশনের যৌথ জরিপে দেখা গেছে, ৩০ বছরের কম বয়সী প্রতি তিনজন পাকিস্তানির একজন বিদেশে গিয়ে চাকরি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা তরুণদের মধ্যে এ হার ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন গ্যালাপ পাকিস্তানের নির্বাহী পরিচালক বিলাল গিলানি।

তাহির বলেন, তাদের প্রজন্ম তাদের মা–বাবাদের সময়ের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছে। এক দশক আগেও পাকিস্তানে তাদের মা–বাবারা বাড়ি কিনতে পারতেন, বিনিয়োগ করতে পারতেন, সম্পদও অর্জন করতে পারতেন।